Subscribe Us

নারীর অধীকার ও মর্যাদা


 মহিলাদের অধিকার – কুরআনিক দৃষ্টিভঙ্গি

লিখকঃ মাহাতাব আকন্দ
বন্ধুগণ!
মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি হলো নারীকে মানুষ থেকে কম কিছু মনে করা। একসময় আরবের মরুভূমিতে কন্যাশিশু জন্ম নিলে লজ্জায় মুখ ঢেকে রাখতো বাবা। কেউ কেউ জীবন্ত কবর দিয়ে দিতো সেই নিরপরাধ কন্যাকে। কুরআন সেই ভয়ঙ্কর অন্যায়কে চ্যালেঞ্জ করে আঘাত হেনেছে—

“وَإِذَا الْمَوْءُودَةُ سُئِلَتْ، بِأَيِّ ذَنبٍ قُتِلَتْ” (সূরা তাকওীর ৮-৯)
অর্থ: "যখন জীবন্ত কবর দেয়া কন্যাশিশুকে জিজ্ঞেস করা হবে, কোন অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল?"

এই আয়াত মানবসভ্যতার বুক চিরে বিদ্রোহী এক বজ্রপাত। কুরআন নারীকে মৃত্যুর নয়, জীবনের অধিকার দিয়েছে। সম্মান, মর্যাদা, স্বাধীনতা দিয়েছে। অথচ আজও মুসলিম সমাজের বিশাল অংশে নারীকে দ্বিতীয় শ্রেণির মানুষ হিসেবে দেখা হয়। কেন? কারণ আমরা কুরআন ছেড়ে সংস্কৃতি, হাদিস-ফিকহের জাল আর মোল্লাতন্ত্রকে আঁকড়ে ধরেছি।

বন্ধুগণ!
নারীর উত্তরাধিকার নিয়ে কুরআন যে বিপ্লব এনেছে, তা আজও অনেকের হজম হয়নি। কুরআন বলছে—

“لِلرِّجَالِ نَصِيبٌ مِمَّا تَرَكَ الْوَالِدَانِ وَالأَقْرَبُونَ وَلِلنِّسَاءِ نَصِيبٌ مِمَّا تَرَكَ الْوَالِدَانِ وَالأَقْرَبُونَ مِمَّا قَلَّ مِنْهُ أَوْ كَثُرَ نَصِيبًا مَفْرُوضًا” (সূরা নিসা ৭)

অর্থ: "পুরুষদের জন্য আছে একটি অংশ, যা তাদের পিতামাতা ও নিকটাত্মীয়রা রেখে যায়। এবং নারীদের জন্যও আছে একটি অংশ, যা তাদের পিতামাতা ও নিকটাত্মীয়রা রেখে যায়— অল্প হোক বা বেশি— নির্ধারিত অংশ হিসেবে।"

বন্ধুগণ! এখানে পরিষ্কার বলা হলো নারীরও অধিকার আছে। ইসলামপূর্ব যুগে নারী উত্তরাধিকার পেত না। তাকে সম্পত্তি নয়, সম্পত্তির অংশ ভাবা হতো। কুরআন এসে ঘোষণা করল— "না, নারীও মানুষ, সে-ও পাবে নিজের প্রাপ্য।"

কিন্তু দুর্ভাগ্য! আজ মুসলিম সমাজেই মেয়েদের সম্পত্তি কেড়ে নেয়া হয়। ভাইয়েরা বোনদের উত্তরাধিকার গিলে খায়। গ্রামের পর গ্রামে দেখা যায়— বোনকে বলা হয়, “তুই তো স্বামীর বাড়ি চলে গেছিস, এখন আবার জমি-জমা চাই কেন?” অথচ কুরআনের আইন ভেঙে এরা নিজেদের নামাজ-রোজা নিয়ে গর্ব করে। এরা কি কুরআনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে না?

বন্ধুগণ!
এবার আসি বিবাহের অধিকারের কথায়। কুরআন বলে—

“فَانكِحُوا مَا طَابَ لَكُم مِّنَ النِّسَاءِ” (সূরা নিসা ৩)
অর্থ: “তোমাদের জন্য যা পছন্দনীয় নারী, তাদের সাথে বিবাহ করো।”

দেখুন! এখানে স্পষ্ট বলা হলো, নারীর সম্মতি ছাড়া বিবাহ বৈধ নয়। কারণ যদি নারী রাজি না থাকে, তবে সে কিভাবে “পছন্দনীয়” হবে? অথচ মুসলিম সমাজে আজও হাজারো মেয়েকে জোর করে বিয়ে দেয়া হয়। বাবার ইচ্ছা, ভাইয়ের সিদ্ধান্ত, পরিবারের চাপ— কিন্তু কুরআন এসবকে বৈধতা দেয়নি।

কুরআন নারীকে বিবাহের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা দিয়েছে। তালাকের অধিকারও দিয়েছে। নারী যদি নির্যাতনের শিকার হয়, যদি জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে— তবে তারও বিচ্ছেদের অধিকার আছে। কুরআন নারীর হাতে সেই স্বাধীনতা রেখেছে।

কিন্তু সমাজে কী হয়? মেয়েকে বলা হয়— “তালাক চাইলে বদনাম হবে।” আবার পুরুষতান্ত্রিক ফিকহ নারীকে প্রায় অক্ষম বানিয়ে রেখেছে। ফলে কুরআনের দৃষ্টিভঙ্গি মুছে গেছে।

বন্ধুগণ!
এবার আসি পর্দার প্রসঙ্গে। মুসলিম সমাজে সবচেয়ে বেশি অপব্যাখ্যা হয়েছে এখানেই। কুরআনের হিজাব শব্দকে টেনে এনে মেয়েদের কালো তাঁবুর ভেতর ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে। অথচ কুরআন যখন সুরা নূর-এ পর্দার কথা বলে, তখন পুরুষকেও প্রথমে সতর্ক করেছে—

“قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ” (সূরা নূর ৩০)
অর্থ: "মুমিন পুরুষদের বলুন, তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি সংযত করে এবং নিজেদের লজ্জাস্থান রক্ষা করে।"

অর্থাৎ পর্দার প্রথম নির্দেশ পুরুষের জন্য! কিন্তু আজ মোল্লারা শুধু নারীর দিকে আঙুল তোলে। কুরআন নারীকে বলেছে—

“وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ” (সূরা নূর ৩১)
অর্থ: "আর মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি সংযত করে।"

অর্থাৎ নারী-পুরুষ উভয়েই পর্দা মানবে— যার মূল হলো দৃষ্টি সংযমচারিত্রিক শালীনতা। কিন্তু আজ মুসলিম সমাজে পর্দাকে কাপড়ের পরিমাণ দিয়ে মাপা হয়! কোনো মেয়ের ওড়না একটু পিছলে গেলে সমাজ গর্জে ওঠে, কিন্তু পুরুষরা রাস্তা-ঘাটে কুরুচিপূর্ণ দৃষ্টি ছুঁড়তে থাকে— সেটা কেউ দেখে না।

কুরআনের পর্দা হলো আচরণের শালীনতা, দৃষ্টি সংযম, এবং সামাজিক নিরাপত্তা। অথচ আমরা এটাকে কালো আবরণে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছি। এ অন্যায়কে ভাঙতে হবে।

বন্ধুগণ!
নারীর অধিকার নিয়ে কুরআন এত বিপ্লবী অবস্থান নিয়েছে যে, সে যুগের মানুষ বিস্মিত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আজকের মুসলিমরা আবার সেই অন্ধকার যুগে ফিরে গেছে। আমরা কন্যাশিশুকে হত্যা করি না, কিন্তু মানসিকভাবে হত্যা করি। তাকে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করি, উত্তরাধিকার কেড়ে নিই, বিবাহে স্বাধীনতা দিই না, পর্দার নামে বন্দি করি।

এগুলো সবই কুরআনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। অথচ আমরা মুখে বলি, “আমরা মুসলিম।”

বন্ধুগণ!
মহিলাদের অধিকার নিয়ে যে মিথ্যা গল্প আমরা যুগে যুগে শুনে আসছি, তা আসলে এক গভীর ষড়যন্ত্র। কুরআন মহিলাকে আল্লাহর খলিফা, মানুষের সমকক্ষ, এবং সম্মানের অধিকারী বানিয়েছে; অথচ আমরা তাকে গৃহবন্দী দাসীতে রূপান্তর করেছি। আমরা কুরআনের নাম নিয়ে তাকে বন্দী করেছি, হাদিসের নামে তার মুখে তালা লাগিয়েছি, ফিকহের নামে তার দেহকে বাজারে তুলেছি! অথচ কুরআন চিৎকার করে বলছে— “وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ” — “নারীদের অধিকার যেমন আছে, তেমনি তাদের ওপর দায়িত্বও আছে, ন্যায় অনুযায়ী।” (সুরা বাকারা ২:২২৮)। কিন্তু বন্ধু, আমরা কি সেই ন্যায় প্রতিষ্ঠা করেছি? না, আমরা এক লজ্জাজনক ভণ্ডামি প্রতিষ্ঠা করেছি!

বন্ধুগণ!
দেখো, কুরআন নারীর স্বাধীনতা ঘোষণা করে বলেছে: “فَانكِحُوا مَا طَابَ لَكُم مِّنَ النِّسَاءِ” — “তোমাদের জন্য যা ভালো মনে হয় সেই নারীর সাথে বিয়ে কর।” (৪:৩)। এখানে বলা হয়েছে "তোমাদের জন্য" — মানে উভয়ের সম্মতিতে। কিন্তু আমাদের সমাজে বিয়ে মানে কী? অভিভাবকের দাসত্ব, মেয়ের কণ্ঠ রুদ্ধ করে দেয়া, জোরপূর্বক সম্পর্ক চাপিয়ে দেয়া। কুরআন বলছে সম্মতি ছাড়া বিয়ে নেই, কিন্তু মোল্লারা বলছে “ওলির ইজাজত ছাড়া বিয়ে হারাম”! বন্ধুগণ, এটা কিসের ইসলাম? এটা আল্লাহর কিতাবের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো ধর্মব্যবসার কারখানা!

বন্ধুগণ!
কুরআন নারীর উত্তরাধিকার নিশ্চিত করেছে। স্পষ্ট করে বলেছে: “لِلرِّجَالِ نَصِيبٌ مِّمَّا تَرَكَ الْوَالِدَانِ وَالْأَقْرَبُونَ وَلِلنِّسَاءِ نَصِيبٌ” (৪:৭) — “পুরুষের যেমন অংশ আছে, তেমনি নারীরও অংশ আছে।” কিন্তু আমরা কী করেছি? পীর-মোল্লার fatwa দিয়ে বলেছি— “নারী কিছু পাবে না যদি স্বামী বা ভাই থাকে।” আমরা কবরের বেদি বানিয়ে নারীর সম্পদ গিলে খেয়েছি। কুরআন নারীকে সম্পত্তির মালিক বানিয়েছে, অথচ আমরা তাকেই সম্পত্তি বানিয়েছি! বন্ধুগণ, এটা বিদ্রোহ করার মতো সময়, কারণ এ অন্যায় চলতে থাকলে আল্লাহর শাস্তি আসবেই!

বন্ধুগণ!
আজকের সমাজে নারীর পর্দা নিয়ে যে কাণ্ডকারখানা, সেটা একদম অমানবিক। কুরআন কেবল বলেছে: “قُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ” (২৪:৩১) — “বিশ্বাসী নারীদের বলো তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে।” কুরআনের লক্ষ্য দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ, আচরণ নিয়ন্ত্রণ, চরিত্র সংযম। কিন্তু মোল্লারা এটাকে বানিয়েছে কাপড়ের খাঁচা, কালো বোরকা, চোখে নেট, মুখে তালা। কুরআনের বার্তা হলো ভেতরের পর্দা, আত্মার পর্দা। কিন্তু আমরা বানিয়েছি নারীর জন্য লোহার কারাগার। বন্ধুগণ, আমি জোর গলায় বলছি— যে ইসলাম নারীর স্বাধীনতা কেড়ে নেয়, সে ইসলাম মুহাম্মদের নয়, সে ইসলাম কোরআনের নয়!

বন্ধুগণ!
আমাদের সমাজে নারীর নাম পর্যন্ত মুছে ফেলা হয়েছে। পিতার নাম থাকবে, স্বামীর নাম থাকবে, কিন্তু মায়ের নাম থাকবে না! অথচ কুরআন বারবার মা’র মর্যাদা তুলে ধরেছে। আল্লাহ বলছেন: “وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا” — “আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সৎ ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছি।” (৪৬:১৫)। কিন্তু বাস্তবে আমরা মায়ের নাম ভুলে যাই, কেবল বংশধারা বাবার নামে। কুরআন মা-বাবাকে সমান সম্মান দিয়েছে, আর আমরা নারীকে কেটে ফেলেছি বংশের গাছ থেকে। বন্ধুগণ, এটা কোরআনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা!

বন্ধুগণ!
কুরআন নারীর শিক্ষা নিয়ে স্পষ্ট— “قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ” — “বল, যারা জানে আর যারা জানে না, তারা কি সমান?” (৩৯:৯)। এখানে নারী-পুরুষ আলাদা করে কিছু বলা হয়নি। জ্ঞান সব মানুষের জন্য। কিন্তু মোল্লারা নারীর শিক্ষা বন্ধ করে বলল— “নারীর বিদ্যা যত বাড়বে, তত বিপদ!” বন্ধুগণ, কুরআন নারীকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করতে চেয়েছে, আর আমরা তাকে অন্ধকার গলিতে ঠেলে দিয়েছি। এই অন্যায় ভাঙতেই হবে!

বন্ধুগণ!
বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাকের বিষয়েও কুরআন নারীকে স্বাধীনতা দিয়েছে। “فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌ بِإِحْسَانٍ” (২:২২৯) — “সুন্দরভাবে রাখা বা সুন্দরভাবে বিচ্ছেদ।” কুরআন বিচ্ছেদকে সম্মানের সাথে বৈধ করেছে। কিন্তু আমাদের সমাজে নারী বিচ্ছেদ চাইলে তাকে কলঙ্কিত করা হয়, চরিত্রহীন বলা হয়। কুরআন বলে ন্যায়সঙ্গত বিচ্ছেদ হোক, আর আমরা নারীকে দাসীর মতো বেঁধে রাখতে চাই। বন্ধুগণ, এটা কোরআনবিরোধী দাসপ্রথা ছাড়া আর কিছুই নয়!

বন্ধুগণ!
কুরআন স্পষ্ট বলেছে: “وَلا تَتَمَنَّوْا مَا فَضَّلَ اللَّهُ بِهِ بَعْضَكُمْ عَلَى بَعْضٍ” (৪:৩২) — “তোমরা একে অপরের প্রতি হিংসা কোরো না; পুরুষ যা উপার্জন করবে তার অংশ পাবে, নারী যা উপার্জন করবে তারও অংশ পাবে।” অথচ আমরা নারীকে উপার্জনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছি। আমরা বলেছি— “মেয়েরা বাইরে কাজ করতে পারবে না।” অথচ কুরআন নারীর উপার্জনকে বৈধ করেছে। আমরা আল্লাহর বাণীকে অস্বীকার করে নিজেদের শয়তানি আইন চালু করেছি। বন্ধুগণ, এখনই কণ্ঠ তুলতে হবে— এই প্রতারণার বিরুদ্ধে!

বন্ধুগণ!
কুরআন নারীর মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করেছে। বলেছে: “وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آدَمَ” (১৭:৭০) — “আমি আদম সন্তানকে সম্মানিত করেছি।” এখানে পুরুষ-নারী উভয়ই অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু আজকের সমাজে নারীকে সম্মানের পরিবর্তে বাজারের পণ্য বানানো হয়েছে। কোথাও বিজ্ঞাপনে তার দেহ বিক্রি করা হচ্ছে, কোথাও ধর্মের নামে তার মুখ ঢেকে তাকে অদৃশ্য করা হচ্ছে। কুরআন নারীর সম্মান চেয়েছে, অথচ আমরা তাকে অবমাননার যন্ত্র বানিয়েছি। বন্ধুগণ, কুরআনের দৃষ্টিভঙ্গি ফিরিয়ে আনতেই হবে— নারীকে আবার সম্মানিত খলিফার আসনে বসাতে হবে!

বন্ধুগণ!
আজ আমরা নারীর নাম করে হাজারো এনজিও চালাই, ফেমিনিজমের নামে পশ্চিমা সংস্কৃতির দাসত্ব করি, আবার ইসলামের নামে নারীর গলা টিপে ধরি। দু’দিকেই প্রতারণা। কুরআন neither দাসত্ব চায়, nor বেপরোয়া উন্মুক্ততা। কুরআন চায় ভারসাম্য— মর্যাদা, স্বাধীনতা, ন্যায়। বন্ধুগণ, সেই ভারসাম্য ফিরিয়ে না আনলে সমাজ ভেঙে পড়বে, পরিবার ধ্বংস হবে, মানবিকতা নিঃশেষ হবে।

বন্ধুগণ!
মহিলাদের অধিকার মানে শুধু কিছু রিচুয়াল নয়; এটি গোটা সমাজ ব্যবস্থার ভিত। কুরআন যদি নারী-পুরুষ উভয়কে সমান মর্যাদা দিয়ে খলিফা বানিয়ে থাকে, তবে আমরা কে তাকে দাসী বানানোর? কুরআন যদি তার সম্পদ, শিক্ষা, বিবাহ, বিচ্ছেদ, কাজ— সবকিছুর অধিকার ঘোষণা করে থাকে, তবে আমরা কে তা কেড়ে নেয়ার? বন্ধুগণ, আজ যদি আমরা নীরব থাকি, তবে কাল আমাদের কন্যারা আল্লাহর কাছে বিচার চাইবে— “হে আল্লাহ! তোমার কিতাবে আমরা সম্মানিত ছিলাম, কিন্তু আমাদের পিতারা, আমাদের মোল্লারা আমাদের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছিল!” তখন আমরা কী উত্তর দেব?

বন্ধুগণ!
আমি আজ বিদ্রোহের ডাক দিচ্ছি— মিথ্যা ধর্মব্যবসায়ী, নারী দমনকারী, কোরআন বিকৃতকারীদের বিরুদ্ধে। আমি বলছি— কোরআনের নারীর মুক্তি ফিরিয়ে আনো! তার শিক্ষা, তার সম্পদ, তার নাম, তার মর্যাদা, তার স্বাধীনতা ফিরিয়ে দাও! এটা কোনো করুণা নয়— এটা আল্লাহর হুকুম! যে আল্লাহর হুকুম মানবে না, সে ইসলাম দাবী করার যোগ্যই নয়।

Post a Comment

0 Comments