প্রত্যাশা বনাম বাস্তবতা
মাদরাসা শিক্ষা
লিখকঃ- মাহাতাব আকন্দ
বন্ধুগণ!
শিক্ষা—আমি বলি, শিক্ষা হলো মুক্তির চাবি!
যে শিক্ষা অন্ধকার ভাঙে, দাসত্ব ছিঁড়ে ফেলে,
যে শিক্ষা মানুষকে তোলে মানুষে, পশুত্ব থেকে করে মুক্ত।
বন্ধুগণ!
আমরা ভেবেছিলাম—মাদরাসা হবে আলোর মিনার!
ওখানে থাকবে কুরআনের ব্যাখ্যা, গবেষণা,
সেখানে ফুটে উঠবে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, জ্ঞানের মহাসমুদ্র।
আমরা ভেবেছিলাম—সেখান থেকে জন্ম নেবে সৎ প্রজন্ম,
যারা দুনিয়ার নেতা, আখিরাতেরও পথপ্রদর্শক!
কিন্তু—বন্ধুগণ!
বাস্তবতা হলো অন্ধকার!
আজকের মাদরাসায় নেই আলো, নেই জ্ঞান, নেই গবেষণা।
আছে শুধু মুখস্থ বিদ্যা—
শত বছর আগের মানুষী কিতাবের শেকল,
আছে ফকিহদের শুকনো তর্ক, মাজহাবি তর্ক,
আছে মোল্লাদের ঝগড়া—
তারাবী ৮ রাকাত না ২০ রাকাত!
মিলাদ আছে কি নাই!
মাজারে যাওয়া যাবে কি যাবে না!
এই হলো তাদের বিজ্ঞান, এই হলো তাদের দর্শন!
বন্ধুগণ!
আমরা ভেবেছিলাম—মাদরাসা দেবে নৈতিকতার যোদ্ধা।
কিন্তু কী পেলাম?
পেলাম উগ্রতার বিষ, পেলাম গোঁড়ামির বিষাক্ত ফল।
শুনছি মাদরাসার ভেতরে অমানবিক কান্না—
শিশুদের আর্তনাদ, নিরীহ ছাত্রছাত্রীদের উপর নির্যাতন।
যেখানে নৈতিকতার শিক্ষা হওয়ার কথা ছিল,
সেখানে ঘটছে বর্বরতার উৎসব!
বলুন বন্ধুগণ, এ কি আমরা চেয়েছিলাম?
বন্ধুগণ!
যখন ডাক্তার বিজ্ঞান শিখে রোগীর জীবন বাঁচায়—
তখন জাতি এগোয়!
যখন কৃষিবিদ নতুন ফসল উদ্ভাবন করে—
তখন জাতি উন্নত হয়!
যখন বিজ্ঞানী নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার করে—
তখন জাতি বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়!
কিন্তু আজকের তথাকথিত আলেমরা?
তারা এখনো তর্কে ডুবে আছে—
ওজুর মাসেহ কিভাবে হবে?
নখ কাটলে অজু ভাঙবে কি না?
ওমুকে তিন তালাক দিয়েছে তার বৌকে এখন কার সাথে হিল্লা দেয়া যায় ইত্যাদি।
এই হলো তাদের জ্ঞান, এই হলো তাদের আবিষ্কার!
বন্ধুগণ!
আল্লাহ তো বলেছিলেন—
"এ কিতাব আমি নাজিল করেছি, যাতে মানুষ চিন্তা করে।" (সূরা সাদ ৩৮:২৯)
কিন্তু আজকের মাদরাসায় কুরআনের গবেষণা হয় না,
বরং মানুষের বানানো মতবাদের গর্তে পড়ে আছে!
কুরআন পড়ে ধুলো জমছে তাকের ওপরে,
আর মুখে মুখে চলছে হাদিসি ঝগড়া, মাযহাবি যুদ্ধ!
বন্ধুগণ!
আমরা ভেবেছিলাম—মাদরাসা দেবে মুক্তি,
কিন্তু বাস্তবে তা পরিণত হয়েছে কারাগারে!
আমরা চেয়েছিলাম—সেখান থেকে আসবে আলো,
কিন্তু বের হচ্ছে অন্ধকারের শিকল,
বের হচ্ছে বিভক্তি, উগ্রতা, অশান্তির আগুন।
বন্ধুগণ!
তাহলে মুক্তি কোথায়?
মুক্তি একটাই—ফিরে আসতে হবে কুরআনের কাছে!
মাদরাসার বুকের ভেতর ঢোকাতে হবে কুরআনের আলো,
গবেষণা করতে হবে তার প্রতিটি আয়াত,
আলোর খোঁজে খুঁজতে হবে বিজ্ঞানের রহস্য,
প্রযুক্তির সমাধান, কৃষির উন্নয়ন, চিকিৎসার দিশা!
তবেই মাদরাসা হবে সত্যিকারের আলোকস্তম্ভ!
আমরা চাই মাদরাসা এমন হৌক।
বন্ধুগণ!
না হলে মাদরাসা জাতিকে মেরে ফেলবে,
উগ্রতার আগুনে জ্বালিয়ে দেবে,
গোঁড়ামির অন্ধকারে ডুবিয়ে দেবে।
তাহলে বলি আমি—
আমাদের সোচ্চার হতে হবে!
বিদ্রোহ করতে হবে গোঁড়ামির বিরুদ্ধে,
অন্ধকারের বিরুদ্ধে,
মোল্লাতন্ত্রের বিরুদ্ধে!
বিদ্রোহ করতে হবে কুরআনের আলো ফিরিয়ে আনার জন্য!
জাতিকে বাঁচানোর জন্য!
মানুষকে মুক্ত করার জন্য!
বন্ধুগণ!
আমি সমালোচনা করছিনা, আমি সংসোধন চাই।
হ্যাঁ, আমরা অস্বীকার করতে পারি না,
মাদরাসার কিছু আলো আছে,
কিছু অবদান আছে,
যা ইতিহাসকে বদলেছে,
যা ইসলামকে টিকিয়ে রাখতে অবদান রেখেছে।
বন্ধুগণ!
সবচেয়ে বড় অলৌকিক অবদান—
কুরআনের হিফজ!
হাজার বছরের ঝড়-ঝাপটায়ও
কুরআনের একটি হরফ বিকৃত হয়নি!
এটা কি সহজ ব্যাপার?
না, এটা হয়েছে মাদরাসার সেই হিফজ প্রোগ্রামের কারণে,
যেখানে কোটি কোটি শিশু বুকের ভেতর কুরআনকে বন্দী করে রেখেছে।
আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ হয়েছে—
"নিশ্চয়ই আমি কুরআন নাজিল করেছি,
এবং আমি-ই এর সংরক্ষণকারী।" (সূরা হিজর ১৫:৯)
কিন্তু বন্ধুগণ! — “হিফজই কি সব?”
হিফজ আলো —স্বীকার করি; কিন্তু মুখস্থ যদি বোধহীন হয়, এই মুখস্থ যদি না বুঝাই থাকে। তাহলে তা আলোহীন হয়ে যায়!
সত্য কথা বলতে : প্রয়োজন হল হিফজ + তাদাব্বুর + প্রয়োগ—তবেই কুরআন জীবন্ত হবে।
আল্লাহ বলেন: “أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ الْقُرْآنَ”—তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা করে না? (৪৭:২৪)
শুদ্ধকরণ: হিফজের সাথে অনুবাদ, ভাবার্থ, বিষয়ভিত্তিক গবেষণা, নীতিশাস্ত্র, যুক্তি ও প্রকল্পকাজ বাধ্যতামূলক হতে হবে —তবেই রক্ষা হবে, তবেই জাতি আলোকিত হবে।
বন্ধুগণ!
তৃতীয়ত—মাদরাসা দিয়েছে ধর্মীয় নেতৃত্ব।
ইমাম দাঁড়িয়েছে মসজিদের মিম্বারে,
খুতবা দিয়েছে, জানাজা পড়িয়েছে,
সমাজে ইসলামের পরিবেশ বজায় রেখেছে।
ভাবুন তো—যদি এসব না থাকত?
তাহলে কি মুসলমানদের পরিচয় টিকে থাকত?
নাকি তারা গলে যেত অন্য সংস্কৃতির স্রোতে?
আমরা সীকার করছি বন্ধুগণ! তবে আমাদের চাওয়া ছিলো আরো ব্যাপক কিছু —
খুতবা যদি ঘুম পাড়ায়, তাহলে নেতৃত্ব বেচে থাকবে কিভাবে?!
ইমাম সমাধান-দাতা হবে—বেকারত্বের, নেশা, গৃহহিংসা, ঋণ-ফাঁদ, প্রযুক্তি-নৈতিকতা—কুরআনী নীতি দিয়ে বাস্তব রোডম্যাপ দেবেন।
খুতবা হবে সমসাময়িক সমস্যা + কুরআনী নীতির কর্মসূচি; মসজিদ হবে সামাজিক সেবা কেন্দ্র।
বন্ধুগণ!
মাদরাসার আরেকটি মহৎ অবদান—
গরিবের সন্তানদের জন্য শিক্ষার সুযোগ।
যেখানে সাধারণ স্কুলে টাকার বাধা,
বই, খাতা, ইউনিফর্মের ভারী খরচ—
সেখানে মাদরাসা বিনা খরচে দিয়েছে থাকা-খাওয়া,
শিখিয়েছে অন্তত মৌলিক কিছু জ্ঞান।
গরিবের সন্তান একেবারে অশিক্ষিত হয়নি—
এটাও তো বড় বিষয়!
কিন্তু এর সাথে আমাদের এটা কাম্য ছিলোনা যে, বিনা খরচে থাকা খাওয়া দিতে গিয়ে,
ছাত্রদের নামাতে হবে হাটে বাজারে, রাস্তায় গাড়িতে চাদা আদায়ের জন্য। এভাবে চাদা আদায় করে ইসলামকেই কলংকিত করা হয়েছে। ইসলাম হয়ে গেছে আজ ভিক্ষার ধর্ম।
বন্ধুগণ!
মাদরাসা দিয়েছে সামাজিক বন্ধনও।
আলেমরা বিয়ে পড়িয়েছে,
দাফন-কাফন সম্পন্ন করেছে,
মৃত্যুর সময় দাঁড়িয়ে থেকেছে মানুষের পাশে।
এভাবেই টিকে আছে আমাদের ধর্মীয় সংস্কৃতি।
বন্ধুগণ!
আরেকটি কথা—ভাষা শিক্ষা।
মাদরাসায় কিছুটা হলেও শেখানো হয় আরবি, ফারসি, উর্দু।
যদিও দুর্বলভাবে,
তবুও অন্তত মানুষ আল্লাহর কিতাবের ভাষার সাথে
কিছুটা পরিচিত হয়।
এটা ছোট নয়, বড় অবদান!
বন্ধুগণ!
সবচেয়ে বড় কথা—
মাদরাসা মনে করিয়ে দেয় আখিরাতের কথা।
যখন দুনিয়ার স্কুল-কলেজ মানুষকে বানাচ্ছে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী—
কিন্তু অনেককে বানাচ্ছে নাস্তিক,
তখন মাদরাসা অন্তত মনে করিয়ে দেয়—
“দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী, আখিরাতই চিরস্থায়ী।” (সূরা আনকাবুত ২৯:৬৪)
বন্ধুগণ!
তাহলে কি আমরা অস্বীকার করব?
না, মাদরাসার অবদান আছে—
কুরআন সংরক্ষণে, ঈমান জাগ্রত রাখতে,
ধর্মীয় পরিচয় ধরে রাখতে।
কিন্তু প্রশ্ন জাগে—
এগুলোই কি যথেষ্ট?
শুধু কুরআন মুখস্থ করাই কি যথেষ্ট?
শুধু জানাজা পড়ানোই কি যথেষ্ট?
শুধু আখিরাতের ভয় দেখানোই কি যথেষ্ট?
বন্ধুগণ!
প্রশ্ন রয়ে গেল—
এটা কি সত্যিই আমাদের জাতিকে মুক্তি দিতে পারবে?
নাকি সময় এসেছে—
এই সীমাবদ্ধতার শেকল ভেঙে
মাদরাসাকে নতুনভাবে গড়ে তোলার?
বন্ধুগণ!
আমরা যেমন বলেছি, মাদরাসা শিক্ষার কিছু লাভ আছে — তবে বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা যায় এর অনেক বড় ক্ষতিও আছে। যদি এগুলো খোলাখুলি আলোচনা না করি, তবে উন্নতির কোনো পথও তৈরি হবে না।
বন্ধুগণ!
প্রথম ক্ষতি হলো — মানব রচিত বইয়ের আধিপত্য। আমরা ভেবেছিলাম মাদরাসায় কুরআনই হবে মূল বিষয়, গবেষণার কেন্দ্র হবে আল্লাহর কিতাব। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, মাদরাসায় পড়ানো হয় শত শত বছরের পুরনো মানব রচিত কিতাব। কুরআন সরাসরি পড়ানো হয় কম, বরং বিভিন্ন তর্ক-বিতর্কের বই, ফিকহের কিতাব, জটিল ব্যাকরণ, দর্শনের পুরনো কিতাবই মুখস্থ করানো হয়। এর ফলে ছাত্ররা কুরআনের আলো থেকে বঞ্চিত হয়। আল্লাহ বলেন —
“আমি কুরআনকে সহজ করেছি উপদেশ গ্রহণের জন্য, তবে কেউ কি উপদেশ গ্রহণকারী আছে?” (সূরা ক্বামার, ৫৪:১৭)
---
বন্ধুগণ!
দ্বিতীয় ক্ষতি হলো — উগ্রতা ও গোঁড়ামি। অনেক মাদরাসায় ছাত্রদের শেখানো হয় নিজের মাজহাবকেই চূড়ান্ত মনে করতে, অন্যদের ভুল প্রমাণ করতে। ফলে সহনশীলতার পরিবর্তে তৈরি হয় বিদ্বেষ। যেখানে কুরআন মানুষকে ঐক্যের দিকে ডাকছে, সেখানে মাদরাসার পাঠ্যক্রম বিভক্ত করছে মুসলমানদের।
---
বন্ধুগণ!
তৃতীয় ক্ষতি হলো — নৈতিকতার অভাব। আমাদের আশা ছিল, মাদরাসা থেকে বের হবে নৈতিক, চরিত্রবান মানুষ। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অনেক মাদরাসায় যৌন নির্যাতন, শিশুধর্ষণ, শারীরিক নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটছে। যা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য সবচেয়ে লজ্জাজনক বিষয়। অথচ আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেছেন —
“তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যার চরিত্র উত্তম।” (সহীহ বুখারি, সহীহ মুসলিম)
---
বন্ধুগণ!
চতুর্থ ক্ষতি হলো — আধুনিক বিজ্ঞানের অভাব। মাদরাসায় ছাত্ররা প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, চিকিৎসা, কৃষি— এসব কিছুই শেখে না। ফলে তারা সমাজে কোনো বৈজ্ঞানিক অবদান রাখতে পারে না। অথচ আল্লাহ কুরআনে বলেছেন —
“তারা কি আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী সম্পর্কে চিন্তা করে না?” (সূরা আ’রাাফ, ৭:১৮৫)
কুরআন মানুষকে গবেষণার দিকে ডাকছে, কিন্তু মাদরাসার পড়াশোনা মানুষকে শুধু পুরনো বিতর্কে আটকে রাখছে।
---
বন্ধুগণ!
পঞ্চম ক্ষতি হলো — সামাজিক পিছিয়ে পড়া। সাধারণ শিক্ষায় পড়া মানুষ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী হয়ে জাতিকে এগিয়ে নিচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে, কৃষিতে নতুন জাতের ফসল আনছে। অথচ মাদরাসা শিক্ষিতরা এসব থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। তারা সমাজে কী বাস্তব উপকার করছে? তারাবী ৮ রাকাত না ২০ রাকাত, মিলাদ আছে কি নেই — এই বিতর্কে তারা আজও মগ্ন।
---
বন্ধুগণ!
ষষ্ঠ ক্ষতি হলো — চাকরির সংকট। মাদরাসা থেকে বের হওয়া ছাত্রদের জন্য কর্মক্ষেত্র খুবই সীমিত। হয় ইমামতি করতে হবে, নয়তো মাদরাসায় শিক্ষক হতে হবে। ফলে তারা আর্থিকভাবে দুর্বল থেকে যায়, সমাজে প্রভাব রাখতে পারে না। অথচ ইসলাম কখনো দারিদ্র্য কামনা করে না। রাসূল ﷺ বলেছেন —
“উপরের হাত (দানকারী হাত) নিচের হাতের (গ্রহণকারী হাতের) চেয়ে উত্তম।” (সহীহ বুখারি)
---
বন্ধুগণ!
সপ্তম ক্ষতি হলো — নারীর প্রতি অবহেলা। মাদরাসার বেশিরভাগ জায়গায় মেয়েদের জন্য ভালো মানের আলাদা শিক্ষা নেই। অথচ একজন নারী শিক্ষিত হলে পুরো পরিবার শিক্ষিত হয়। কুরআনে বলা হয়েছে —
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে আগুন থেকে রক্ষা করো।” (সূরা তাহরীম, ৬৬:৬)
যদি নারীদের শিক্ষাই না দেওয়া হয়, তাহলে পরিবার কীভাবে সঠিক পথে চলবে?
---
বন্ধুগণ!
অষ্টম ক্ষতি হলো — বিশ্বের পরিবর্তনের সাথে তাল মেলাতে অক্ষমতা। আজ পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জেনেটিক্স, মহাকাশ গবেষণায়। অথচ মাদরাসায় এখনো শত শত বছর আগের একই পাঠ্যসূচি চলছে। ফলে শিক্ষার্থীরা সময়োপযোগী হতে পারছে না।
---
বন্ধুগণ!
নবম ক্ষতি হলো — বিভক্ত সমাজ তৈরি। একেক মাদরাসা একেক মতাদর্শ শেখায়। কেউ শুধু হানাফি, কেউ শুধু সালাফি, কেউ শুধু শিয়া, কেউ আবার অন্য কিছু। ফলাফল হলো — মুসলমানরা এক আল্লাহর কিতাব থাকা সত্ত্বেও বিভক্ত হয়ে পড়ছে। আল্লাহ কুরআনে সতর্ক করেছেন —
“তোমরা সবাই আল্লাহর দড়ি শক্ত করে ধরো এবং বিভক্ত হয়ো না।” (সূরা আলে ইমরান, ৩:১০৩)
---
বন্ধুগণ!
সবশেষে বলব — মাদরাসার ক্ষতি শুধু তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং পুরো সমাজে প্রভাব ফেলে। উগ্রতা ছড়ালে সমাজে শান্তি নষ্ট হয়, নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটলে মানুষ ইসলামের প্রতি আস্থা হারায়, আর আধুনিক জ্ঞানের অভাব জাতিকে পিছিয়ে দেয়। তাই মাদরাসা শিক্ষা সংস্কার করা জরুরি।

0 Comments