কুরআনে বর্ণিত চারটি হারাম মাস
লিখকঃ- মাহাতাব আকন্দ
আল্লাহর কিতাবের সামনে দাঁড়িয়ে আমি আজ প্রশ্ন করি—
তোমরা কেন বারবার হারাম মাসের নাম চাইছো?
চারটি হারাম মাসের নাম যদি আল্লাহ লিখে দিতেন,
তবে কি তোমরা বাকী আট মাসে অন্যায় করার লাইসেন্স পেতে?
তাহলে কি আল্লাহ বলতেন—
“তোমরা ইচ্ছেমতো জুলুম করো” (মাআযাল্লাহ)?
না! কখনোই না!
আল্লাহ নিজেই বলেছেন—
“فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنفُسَكُمْ”
“সে মাসগুলোতে নিজেদের উপর জুলুম করো না।” (সূরা তাওবা ৯:৩৬)
আল্লাহ নাম দেননি কারণ নাম উদ্দেশ্য নয়।
উদ্দেশ্য হলো শিক্ষা—
অন্যায়কে না বলা, জুলুমকে না বলা।
আল্লাহ মানুষকে শিখাতে চেয়েছেন—
“إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلظَّـٰلِمِينَ”
“নিশ্চয়ই আল্লাহ জালিমদের ভালোবাসেন না।” (সূরা আলে ইমরান ৩:৫৭)
জেনে রাখ, তুমি কোন দিনই জুলুমের লাইসেন্স পাবে না।
এই মাসগুলোর নাম নতুন কিছু নয়।
ইসলাম আসার আগেই আরবরা জানতো কোন মাস হারাম।
নবীর জন্মের আগে তারা কোন হাদিস পড়ে
হারাম মাসের নাম জেনেছে?
তারা হাদিস থেকে নয় আগে থেকেই জানতো।
কিন্তু তারা ভুলে গিয়েছিল উদ্দেশ্য।
তাই আল্লাহ মনে করিয়ে দিলেন—
“ذَٰلِكَ ٱلدِّينُ ٱلْقَيِّمُ”
“এটাই সঠিক দ্বীন।” (সূরা তাওবা ৯:৩৬)
হারাম মাসে যুদ্ধ বিগ্রহ, অন্যায়-জুলুম হারাম!
কিন্তু আজকের পৃথিবীতে যুদ্ধ কি হারাম মাস দেখে থেমে যায়?
ড্রোন কি রজবের ভয়ে আটকে যায়?
না! আক্রমণ আসে যেকোনো মাসে, যেকোনো দিনে।
তাই কুরআন বলে দিয়েছে—
“فَمَنِ ٱعْتَدَىٰ عَلَيْكُمْ فَٱعْتَدُوا۟ عَلَيْهِ”
“তোমাদের উপর যে আক্রমণ করবে, তোমরাও তার উপর আক্রমণ করো।” (সূরা বাকারা ২:১৯৪)
আমি আজ তীব্র প্রশ্ন করি—
তুমি কি চাও, হারাম মাস ছাড়া বাকি মাসগুলোতে পাপ করার স্বাধীনতা?
তুমি কি ভাবো, আল্লাহর কিতাব অসম্পূর্ণ?
তোমার কথা শুনেতো তাই মনে হয়,
তুমি প্রশ্ন করছে- আপনি যেহেতু দাবী করেন কুরআনে সব আছে। এবং কুরআন ব্যখ্যাসহ নাযিল হয়েছে। যদি তাই হয় তাহলে কিছু আয়াত বলবো এই উত্তর কুরআন থেকে দিবেন বলে আশা করি।
তোমার প্রশ্ন শুনে করুণা হয়- ভেবে দেখতো তুমি কি বলছ? আমি দাবী করি? নাকি আল্লাহ বলছেন কুরআন পুর্ণ! ৫ঃ৩, আল্লাহ বলছেন কুরআনে সব কিছুর ব্যাক্ষা আছে, ১৬ঃ৮৯।
তুমি আল্লাহকে মিথ্যাবাদি বাণিয়ে দিলে? নিজেকে প্রশ্ন কর তুমি এখনো মুসলিম আছ?
ওহ! সরী। তুমিতো আগে থেকেই সালাফি।
শুনে রাখ ও ইমান নবায়ন কর আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন—
“ٱلْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ”
“আজ আমি তোমাদের দ্বীন পূর্ণ করলাম।” (সূরা মায়িদাহ ৫:৩)
তুমি কি ভাবো, আল্লাহ ভুলে গেছেন নাম লিখতে?
তাহলে শুনে নাও—
তুমি সূরা নাহল ১৬:৮৯ অস্বীকার করছো,
যেখানে আল্লাহ বলেছেন—
“وَنَزَّلْنَا عَلَيْكَ ٱلْكِتَـٰبَ تِبْيَـٰنًۭا لِّكُلِّ شَىْءٍۢ”
“আমি এ কিতাব নাজিল করেছি, যাতে সবকিছুর স্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকে।”
★ তুমি বলছ চার মাসের নাম কুরআনে নাই,
তাই হাদিসে যেতে হবে, হাদিসে না পেলে তারপরে কি বেদ পুরানে খুজবে?
মানে তোমাকে পেতেই হবে? যদি এতই প্রয়োজন হতো তাহলে আল্লাহ নামগুলো অবশ্যই দিতেন। আল্লাহ চান কোন মাসেই যেন অন্যায়-জুলুম করা না হয়।
আল্লাহর হিকমত তুমি বুঝনাই।
আজ আমি বিদ্রোহী ভাষায় ঘোষণা দিচ্ছি—
কুরআন পূর্ণাঙ্গ! কুরআন যথেষ্ট!
কোন মাসেই অন্যায় বৈধ নয়।
কোন দিনেই জুলুম অনুমোদিত নয়।
চার মাসে বিশেষ সতর্কতা,
কিন্তু বারো মাসই আল্লাহর সীমারেখা।
আল্লাহর কিতাবই আমাদের জন্য আলো,
তাঁর নির্দেশই আমাদের বেঁচে থাকার পথ।
তিনি বলেছেন—
“وَلَا تَرْكَنُوٓا۟ إِلَى ٱلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ فَتَمَسَّكُمُ ٱلنَّارُ”
“তোমরা জালিমদের প্রতি ঝুঁকো না, না হলে আগুন তোমাদের ছুঁয়ে যাবে।” (সূরা হুদ ১১:১১৩)
তাহলে কেন নাম নিয়ে ঝগড়া?
কেন উদ্দেশ্য হারিয়ে তর্কের সাগরে ভাসা?
আল্লাহর কিতাব কুরআনই পূর্ণাঙ্গ।
হারাম মাসের শিক্ষা হলো—
সব মাসে অন্যায় হারাম, চার মাসে বিশেষ সতর্কতা।
আমি ডাক দিচ্ছি—
কুরআনের পূর্ণতায় ইমান আনো।
নাম নয়, উদ্দেশ্য ধরো।
আল্লাহর সীমারেখা মানো।
আর মনে রেখো—
“وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْكَـٰفِرُونَ”
“যারা আল্লাহ যা নাজিল করেছেন তা দিয়ে বিচার করে না— তারাই কাফের।” (সূরা মায়িদাহ ৫:৪৪)
0 Comments