Subscribe Us

হাদিস সংগ্রহের ইতিহাস ও জালিয়াতি – কুরআনের সাথে সংঘাত

 


হাদিস সংগ্রহের ইতিহাস ও জালিয়াতি – কুরআনের সাথে সংঘাত

رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ، وَأَعُوذُ بِكَ رَبِّ أَنْ يَحْضُرُونِ، الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، وَسَلَامٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى، وَسَلَامٌ عَلَى مُحَمَّدٍ الَّذِي جَاءَ بِالْقُرْآنِ مُهَيْمِنًا
উচ্চারণঃ রব্বি আউযু বিকা মিন হামাযাতিশ শায়াতীন, ওয়া আউযু বিকা রব্বি আন ইয়াহদুরূন, আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন, ওয়া সালামুন আলা মানিত্তাবাআল হুদা, ওয়া সালামুন আলা মুহাম্মাদিল্লাজী জা’আ বিল কুরআনি মুহাইমিনা।
অর্থঃ “হে আমার প্রতিপালক! আমি আশ্রয় চাই শয়তানদের কুমন্ত্রণা থেকে, আর আমি আশ্রয় চাই হে আমার রব! যেন তারা আমার নিকটে না আসে। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সারা বিশ্বের প্রতিপালক। হেদায়াতের অনুসারীদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। এবং শান্তি বর্ষিত হোক মুহাম্মদের উপর, যিনি কুরআনকে হুকুমদাতা হিসেবে নিয়ে এসেছেন।”

বন্ধুগণ!
আজ আমি যে বিষয়ে কথা বলতে চাই, তা কোমল হৃদয়ের জন্য নয়। এটি এমন এক সত্য, যা ইতিহাসের পাতায় রক্ত দিয়ে লেখা — অথচ আড়ালে রাখা হয়েছে, যাতে মুসলমানেরা চিরকাল অন্ধকারেই বন্দি থাকে। বিষয়টি হলো — হাদিস সংগ্রহের ইতিহাস ও জালিয়াতি। এই ইতিহাস শুধু দলিল নয়, এটি প্রতারণার কাহিনী, এটি বিশ্বাসের ওপর সওয়ার হয়ে আসা এক দীর্ঘস্থায়ী শয়তানি খেলা।

বন্ধুগণ!
প্রথমেই মনে রাখুন — কুরআন বারবার ঘোষণা করেছে, “এটি পূর্ণাঙ্গ, বিশদ, মুবিন কিতাব” (৬ নম্বর সূরা আনআম ১১৪, ১৬ সূরা নাহল ৮৯)।
আল্লাহর রাসুলও ঘোষণা করেছিলেন, “আমি তো তোমাদের কাছে রেখে যাচ্ছি কিতাবুল্লাহ”। কিন্তু এরপর কী হলো? রাসুলের মৃত্যুর ২৫০ বছর পরে, একে একে জন্ম নিল হাদিসের বিশাল কারখানা। তখনকার শাসকরা এবং তাদের দরবারি আলেমরা ঘোষণা করল — “না, কুরআন যথেষ্ট নয়! আমাদের হাদিস চাই!” — এভাবেই সত্যকে বেধে ফেলা হলো মানুষের রচিত কাহিনীর সাথে।

বন্ধুগণ!
রাসুলের জীবদ্দশায় যখন কুরআন নাজিল হচ্ছিল, তিনি কুরআনকে রক্ষা করতে সতর্ক করেছিলেন — “আমার কথাগুলো লিখো না”।
(সাহিহ মুসলিম, কিতাবুজ যুহদে এই সতর্কবার্তা আছে)। কেন? কারণ তিনি জানতেন, মানুষ তাঁর কথাকে মিশিয়ে দেবে আল্লাহর বাণীর সাথে, আর একদিন এই মিশ্রণই হয়ে যাবে মুসলমানদের বিভ্রান্তির উৎস। ইতিহাস সাক্ষী, তাঁর আশঙ্কা একদম সত্য হলো।
আজ যারা হাদিস হাদিস করে তাদেরকে বলা হয় শায়েখ,
আর যারা কুরআন মেনে চলে তাদেরকেই বলা হচ্ছে কাফের।
মজার জাতির মজার কথা, বলবো কত আর
চোখ খুললে যায়না দেখা মুদলে পরিষ্কার।

বন্ধুগণ!
রাসুল চলে যাওয়ার পর প্রথম প্রজন্ম — সাহাবীরা — কেউ কোনো হাদিসের বই লিখলেন না। তাঁদের মূল মিশন ছিল কুরআন সংরক্ষণ, কুরআন প্রচার, কুরআন অনুসরণ। তাই মদিনা, কুফা, বসরা, দামেস্ক — কোথাও কোনো হাদিসগ্রন্থ ছিল না। কিন্তু শতাব্দী ঘুরতেই খেলা শুরু হয়ে গেলো। আব্বাসীয় খেলাফত ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে কুরআনের বদলে হাজারো হাদিস বানিয়ে ফেলল।

বন্ধুগণ!
এখানেই শুরু হলো হাদিসের শিল্প-কারখানা। মসজিদের মিম্বরে বসে ইমামরা শুধু কুরআন পড়লে জনতা বশে থাকত না। রাজনীতির দাবী হলো, একদল আলেম দরকার যারা শাসকের নীতি অনুযায়ী আল্লাহর বাণী ঘুরিয়ে ব্যাখ্যা করবে। তখনই বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হলো — “রাসুল নাকি বলেছেন...”। ফলে তৈরি হলো লাখ লাখ মিথ্যা বাণী।

বন্ধুগণ!
হাদিস সংগ্রহকারীরা নিজেরাই স্বীকার করেছেন, তাদের যুগে হাদিস বানানোর প্রতিযোগিতা চলত। ইমাম বুখারি বলেন, তিনি ছয় লক্ষ হাদিস শুনেছেন, এর মধ্যে তিনি মাত্র সাত হাজারের মতো হাদিস তার গ্রন্থে লিখে গেছেন। মানে কী? বাকি ৫ লক্ষ ৯৩ হাজার তিনি “জাল” বা “দুর্বল” বলে ফেলে দিলেন। ইতিহাসে বুখারীর মত বড় হাদিস অস্বীকারকারী আর কাউকে দেখিনাই।
প্রশ্ন হলো — যদি তখনই লাখ লাখ জাল হাদিস ঘুরে বেড়াত, তবে আমরা কীভাবে নিশ্চিত হবো যে অবশিষ্ট অংশ জাল নয়?

বন্ধুগণ!
শুধু বুখারিই নন, আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, নাসাঈ — সবাই তাদের বইতে স্বীকার করেছেন যে অনেক হাদিস দুর্বল, অনেক হাদিস জাল। অথচ এই বইগুলোকেই আজ “সহিহ” বলে কুরআনের সমান আসনে বসানো হয়েছে। আল্লাহ যেখানে বলেন “কুরআনের বাইরে কোনো হুকুম খুঁজো না” (সূরা আল-জাথিয়া 45:6), সেখানে মুসলিম সমাজে বলা হচ্ছে — “কুরআনের সাথে সাথে হাদিসও মানতেই হবে।”

বন্ধুগণ!
একটু ইতিহাসে তাকান। রাসুলের মৃত্যুর পর প্রথম দুই খলিফা — আবু বকর ও উমর — দুজনেই হাদিস সংগ্রহের প্রচেষ্টা নস্যাৎ করেছিলেন। উমর ইবনে খাত্তাবের একটি বিখ্যাত উক্তি আছে: “তোমাদের কাছে কুরআনই যথেষ্ট, হাদিস তোমাদের বিভ্রান্ত করবে।” তিনি অনেক বর্ণনা পুড়িয়ে ফেলেন। মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা (দারুল কুতুব আল-ইলমিয়াহ, বেইরুত, ১৪০৯ হিজরি, খণ্ড ৫, পৃ. ৩৩৪, হাদিস ৩১৬৪৫),
কিছু ঐতিহাসিক দলিল অনুযায়ী, উমর (রা.) সরাসরি হাদিস-সংগ্রহ বন্ধ করেছিলেন।
🔹 যুহদ ইবনে হানবালের লিখা (ইনি হলেন ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বালের পুত্র। তার কিতাব তাযকিরাতুল হাফিজ (খণ্ড ১, পৃ. ৫):

প্রশ্ন হলো, যদি হাদিস ইসলাম রক্ষার অপরিহার্য অংশ হতো, তবে উমর কি তা মুছে ফেলতে পারতেন?

বন্ধুগণ!
আব্বাসীয় খলিফাদের আমলে যখন ক্ষমতার লড়াই তীব্র হলো, তখন দরবারি আলেমরা তাদের পক্ষের হাদিস রচনা করল। যেমন — “রাজাকে মান্য করা ফরজ”, “রাজাকে বিরোধিতা করলে জান্নাত হারাম” ইত্যাদি। এগুলো কি আল্লাহর বাণী? না! এগুলো রাজনৈতিক প্রচারণা, যা হাদিসের নামে প্রচলিত হলো। এভাবেই হাদিসকে অস্ত্র বানিয়ে শাসকেরা দাসত্ব চাপিয়ে দিল মুসলিমদের ওপর।

বন্ধুগণ!
আমরা ভুলে যাই না — হাদিসে এমন সব অমানবিক, কুরআনবিরোধী কথা ঢোকানো হয়েছে, যা পড়লে অন্তর কেঁপে ওঠে। কুরআন যেখানে নারী-পুরুষকে সমান মর্যাদা দিয়েছে, সেখানে হাদিসে বলা হলো — “নারীরা নাকি নরকের প্রধান বাসিন্দা।” কুরআন যেখানে বলছে আল্লাহ ন্যায়পরায়ণ, সেখানে হাদিসে ঢুকানো হলো — “শিশু বাচ্চারা জন্মের আগেই নাকি জান্নাতি বা জাহান্নামি নির্ধারিত।” এগুলো কি আল্লাহর কথা হতে পারে? না! এগুলো অমানুষের লেখা।

বন্ধুগণ!
কুরআন যেখানে যুক্তি, প্রমাণ, সত্য প্রতিষ্ঠার কথা বলছে — হাদিস সেখানে কল্পকাহিনী সাজিয়েছে। হাদিস বলছে, রাসুল নাকি “মীরাজ” এ গিয়ে ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ পেয়েছিলেন, পরে দর-কষাকষি করে নামিয়ে আনলেন পাঁচে! আল্লাহ কি কোনো ব্যাবসায়ী নাকি, যিনি দর-কষাকষি করবেন? কুরআন স্পষ্ট বলেছে — “আল্লাহর বাণী কখনো পরিবর্তন হয় না” (সূরা ইউনুস 10:64)। তাহলে এই গল্প কোথা থেকে এলো? স্পষ্টতই এটি মনগড়া।

বন্ধুগণ!
আজ মুসলমানরা বিভক্ত হয়েছে হাজারো দলে — কারো কাছে সহিহ বুখারি সর্বোচ্চ, কারো কাছে সহিহ মুসলিম, কারো কাছে আবু হানিফা, কারো কাছে আহমদ ইবনে হাম্বল। অথচ আল্লাহ ঘোষণা করেছিলেন — “তোমরা দলে দলে বিভক্ত হয়ো না” (সূরা আনআম 6:159)। তাহলে এই দলাদলি কীভাবে এলো? উত্তর একটাই — কুরআন ছেড়ে হাদিসের সাগড়ে ডুবে যাওয়ার কারণে।

বন্ধুগণ!
আজও মুসলিম সমাজে কুরআনের বদলে হাদিসের প্রতি আনুগত্য বেশি। কেউ প্রশ্ন তুললেই বলা হয় — “তুমি আহলে কুরআন? তুমি কুফরি করছো! তুমি মুরতাদ হয়ে গেছ” অথচ আল্লাহর কিতাবই চূড়ান্ত সত্য। আমরা যদি সত্যি মুসলমান হতে চাই, তবে আমাদের বলতে হবে — “আমরা কুরআনের অনুসারী।”

বন্ধুগণ!
এই ইতিহাস শুধু ভুল নয়, এটি এক ষড়যন্ত্র। একদিকে কুরআনকে বলা হলো অসম্পূর্ণ মানে পাইকারি বই, কিছুই নাই কুরআনে, অন্যদিকে হাদিসকে কুরআনের ব্যাখ্যা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হলো। অথচ আল্লাহ ঘোষণা করেছেন — “আমি নিজেই কুরআনকে ব্যাখ্যা করেছি” (সূরা কিয়ামাহ 75:19)। তাহলে মানুষের ব্যাখ্যার দরকার কিসের? দরকার ছিল কেবল শাসক ও আলেমদের স্বার্থরক্ষা।

বন্ধুগণ!
আজ যদি আমরা সাহস করে কুরআনের দিকে ফিরি, তবে স্পষ্ট দেখতে পাবো — ইসলামের মূল কোনো ভিত্তিই হাদিসের ওপর দাঁড়ায় না। সালাত, যাকাত, সাওম, হজ্জ, ন্যায়-নীতি, পরিবার আইন — সবকিছুর নির্দেশ কুরআনে বিদ্যমান। হাদিস যোগ করেছে শুধু কাহিনী, কুসংস্কার ও বিভ্রান্তি।

বন্ধুগণ!
এখন আমাদের সামনে দুটি পথ — এক, চোখ বন্ধ করে মানুষের বানানো কাহিনী মেনে নেওয়া; দুই, আল্লাহর কিতাবে ফিরতে সাহস দেখানো। যদি আমরা দ্বিতীয় পথ বেছে নিই, তবে মুক্তি আমাদের জন্য নিশ্চিত।

বন্ধুগণ!
হাদিসের নাম করে এমনসব কথা প্রচার করা হলো, যা কুরআনের সাথে প্রকাশ্য যুদ্ধ। উদাহরণ চাই? কুরআন ঘোষণা করছে— “ধর্মে কোনো জবরদস্তি নেই” (সূরা বাকারা 2:256), অথচ হাদিসে ঢোকানো হলো— “যে ধর্ম পরিবর্তন করবে তাকে হত্যা করো।” এটা কি কুরআনের ইসলাম? না, এটা রক্তলোলুপ শাসকদের আইন, যা হাদিসের মোড়কে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বন্ধুগণ!
আরো দেখুন— কুরআন বলছে “নারী-পুরুষ উভয়ে সমান মর্যাদার অধিকারী” (সূরা নিসা 4:32), অথচ হাদিস বলছে— “নারী নাকি অকালপ্রাপ্তি আর বুদ্ধির ঘাটতিতে ভুগে।” প্রশ্ন করি— রাসুল কি নারীদের অবমাননা করতেন? তিনি তো কুরআনের শিক্ষক ছিলেন! তাহলে এসব কথার উৎস একটাই— জাল হাদিস।

বন্ধুগণ!
কুরআন বলছে— “প্রত্যেক আত্মা তার নিজ কর্মের জন্য দায়ী” (সূরা আনআম 6:164)। অথচ হাদিসে ঢুকানো হলো— “রাসুল নাকি বললেন, আমার উম্মাহর জন্য আমি সুপারিশ করব, তাদের পাপ আমি ক্ষমা করাব।” কী অদ্ভুত মিথ্যা! কুরআন যেখানে ঘোষণা করে— “সেদিন কারো সুপারিশ কোনো কাজে আসবে না, সবকিছু আল্লাহর হাতে” (সূরা বাকারা 2:48), সেখানে এই হাদিস বানানো হলো মানুষকে অলস বানাতে, যেন তারা পাপ করেও ভাবে— রাসুল তাদের বাঁচিয়ে নেবেন। নবী হবেন উম্মতের জামিনদার।

বন্ধুগণ!
হাদিসের জালিয়াতি শুধু মতাদর্শে নয়, বরং আমল বা প্র্যাক্টিসেও ভয়াবহ ক্ষতি করেছে। কুরআনে সালাত মানে— আল্লাহর সাথে সম্পর্ক, তাঁর নির্দেশের আনুগত্য, ন্যায় প্রতিষ্ঠা। কিন্তু হাদিস বানাল ৭০০ রকমের রিচুয়াল, লম্বা লম্বা তসবিহ, সিজদার নিয়ম, রাকাতের কাহিনী। ফল কী হলো? মুসলমানরা সালাতের মূল বার্তা হারিয়ে বসলো, আর রইলো শুধু রিচুয়ালের খোলস।

বন্ধুগণ!
আমরা ভুলে যাইনি, হাদিস ছিল রাজনীতির অস্ত্র। একদল বলল— “আমাদের ইমামের হাদিস সহিহ”, অন্য দল বলল— “না, আমাদের ইমামের হাদিস সহিহ।” এই সংঘাত থেকে জন্ম নিল সুন্নি, শিয়া, আহলে হাদিস, আহলে বাইত— হাজারো ভাঙন। অথচ আল্লাহ ঘোষণা করেছিলেন— “তোমরা দলে দলে ভেঙো না” (সূরা রুম 30:32)। তাহলে দোষ কার? কুরআনের নয়, হাদিসের বিভাজনের।

বন্ধুগণ!
আসুন আরেকটি উদাহরণ দেখি— কুরআন বলছে “তোমরা সত্য গোপন করো না, মিথ্যা বানিও না” (সূরা আল-বাকারা 2:42)। অথচ হাদিসে প্রচারিত হলো— “ধর্ম রক্ষার জন্য মিথ্যা বলা বৈধ।” কল্পনা করুন, যারা মিথ্যা প্রচার করাকে ইবাদত বানায়, তারা কি আল্লাহর পথে থাকতে পারে? না!

বন্ধুগণ!
আজ মুসলিম সমাজ কুরআন পড়ে না, হাদিস মুখস্থ করে। আল্লাহর আয়াতের পরিবর্তে ইমামের কাহিনী মুখে মুখে চলে। খুতবায় কুরআন কম, হাদিস বেশি। দীন হয়ে গেছে— মানুষের বানানো আইন। আল্লাহর বাণীকে ফেলে দেওয়া হয়েছে তাকের উপর, আর হাদিসের বই রাখা হয়েছে মাথার উপর। এটি কি ইসলাম? না, এটি মানুষের বানানো ধর্ম।

বন্ধুগণ!
এই হাদিস-নির্ভর ধর্মই মুসলমানকে অন্ধ করেছে। তারা প্রশ্ন করতে ভয় পায়। কেউ যদি বলে— “কুরআনে কোথায় আছে?” সঙ্গে সঙ্গে তাকে বলা হয় কাফের, মুরতাদ। অথচ কাফের হলো সেই ব্যক্তি, যে কুরআনকে অস্বীকার করে। আর আহলে কুরআন তো বলে— শুধু কুরআন মানো! তাহলে আসল কাফের কারা? যারা কুরআন ছেড়ে হাদিস আঁকড়ে ধরে বসে আছে।

বন্ধুগণ!
আমাদের আজ জেগে ওঠা দরকার। হাদিসের জালিয়াতি স্বীকার করা দরকার। আমরা কুরআনের আলোয় দেখতে পাচ্ছি— আল্লাহ কখনো হাদিসকে দীন বানাননি। আল্লাহর রাসুলও কখনো বলেননি— “আমার কথা লিখো আর কিতাব বানাও।” বরং ইতিহাস সাক্ষী— হাদিস মানেই মানুষের লেখা। আর মানুষের লেখা মানেই ভুল।

বন্ধুগণ!
তাহলে সমাধান কী? সমাধান একটাই— কুরআনে ফেরা। কুরআনই একমাত্র সংরক্ষিত কিতাব, যাকে আল্লাহ নিজে রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছেন। ইন্না নাহনু নাজ্জালনায (সূরা হিজর 15:9)। হাদিস সংরক্ষিত নয়, হাদিস ভরা জালিয়াতিতে। কুরআন আল্লাহর বাণী, হাদিস মানুষের বাণী। তাই ইসলাম মানে কুরআন মানা, হাদিস নয়।

বন্ধুগণ!
আজ যদি আমরা সাহস করে ঘোষণা দেই— “আমরা শুধু কুরআনের অনুসারী”— তবে দুনিয়া কেঁপে উঠবে। আলেম সমাজ চিৎকার করবে, মোল্লারা ফতোয়া দেবে, শাসকরা ভ্রু কুঁচকাবে। কিন্তু ভয় নেই! সত্য একদিন মাথা তুলে দাঁড়াবেই দাড়াবে।

বন্ধুগণ!
আমরা বিদ্রোহীদের কণ্ঠে বলি— আমরা মানুষের কাহিনী মানব না, আমরা মানব আল্লাহর বাণী। আমরা ইমামের জাল বাণী ছিঁড়ে ফেলব, আমরা আঁকড়ে ধরব কুরআনকে। আমরা সালাত ফিরিয়ে আনব জীবনের কেন্দ্রে, আমরা যাকাতকে করব সামাজিক ন্যায়বিচারের হাতিয়ার। আমরা আল্লাহর পথে সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য উঠব— কারণ আমরা কুরআনের উম্মত।

বন্ধুগণ!
শেষে আমি বলি— হাদিস হলো অন্ধকার, কুরআন হলো আলো। হাদিস হলো বিভ্রান্তি, কুরআন হলো হিদায়াত। হাদিস হলো মানুষের রচনা, কুরআন হলো আল্লাহর কালাম। তাই দুনিয়া ও আখিরাতের মুক্তি চাইলে— কুরআনে ফিরো, কুরআনে বাঁচো, কুরআনে মরো। এটাই ইসলামের একমাত্র পথ।

Post a Comment

0 Comments