Subscribe Us

f

পাঁচ মিনিটের নামাজ নয়, চব্বিশ ঘণ্টার সালাত

 


"পাঁচ মিনিটের নামাজ নয়, চব্বিশ ঘণ্টার সালাত"

লিখকঃ- মাহাতাব আকন্দ

আজকের আলোচনার বিষয় হলো,
"পাঁচ মিনিটের নামাজ নয়, চব্বিশ ঘণ্টার সালাত"
বক্তব্যটি শুনুন, চিন্তা করুন, আমি বলছিনা যে আমার কথা আপনাকে মানতে হবে। আপনি বিবেকবান মানুষ,
বিবেকবোধকে কাজে লাগান, দলীলগুলো যাচাই পুর্বক সত্য মনে হলে আমলে আনা অথবা না আনা আপনার ইচ্ছার উপর নির্ভর করবে।
সালাত বিষয়ে আমার আরো একটি ভিডিও আছে, যার শিরোনাম "কোরানের সালাত বনাম মানুষের বানানো নামাজ"
আগে এই ভিডিওটি ডিস্ক্রিপসন বক্স থেকে দেখে আসার অনুরোধ করছি।

আচ্ছা বন্ধুগণ!
একবার রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখতো। কোটি কোটি তারকা ছড়িয়ে আছে আকাশ জুরে, সবাই নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরছে। কেউ কখনোই পথভ্রষ্ট হয় না, কেউ দেরি করে আসে না। তুমি কি ভেবেছো— এরা কেন এভাবে চলছে? কোরআন বলছে—
وَلِلَّهِ يَسْجُدُ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا وَظِلَالُهُم بِالْغُدُوِّ وَالْآصَالِ (الرعد 13:15)
“আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে—সবাই স্বেচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় আল্লাহর জন্য সিজদা করে, এমনকি তাদের ছায়াও সকাল ও বিকেলে সিজদা করে।”

দেখো, এখানে সিজদা মানে কি মাটিতে কপাল ঠেকানো? গাছ কি কপাল ঠেকায়? তারকারা কি নামাজ পড়ে? না— এরা সিজদা করছে মানে-  আল্লাহর বিধান মেনে নিয়ে নিজ দায়িত্ব পালন করছে, আল্লাহর নির্ধারিত নিয়ম মেনে চলছে।

বন্ধুগণ!
কোরআন আবার বলছে—
أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يَسْجُدُ لَهُ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ وَالنُّجُومُ وَالْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَابُّ وَكَثِيرٌ مِّنَ النَّاسِ (الحج 22:18)
“তুমি কি দেখনি— আল্লাহর জন্য সিজদা করে আকাশের ও পৃথিবীর সৃষ্টি, সূর্য, চাঁদ, তারা, পাহাড়, গাছ, জীবজন্তু এবং অনেক মানুষও?” ২২ঃ১৮

এবার প্রশ্ন করো তোমার মনে— পাহাড় কীভাবে সিজদা করে? গাছ কীভাবে সিজদা করে?
এর মানে হলো— তারা আল্লাহর হুকুম মেনে নিজের দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করে যাচ্ছে।
নদীর বয়ে চলা— সেটাই তার সিজদা;
গরু দুধ দিচ্ছে— সেটাই তার সিজদা;
মৌমাছি ফুলে ফুলে উড়ে পরাগায়ন করে যাচ্ছে— সেটাই তার সিজদা।

বন্ধুগণ!
আজ আমরা সিজদাকে কেবল মাটির সঙ্গে জুড়ে ফেলেছি। অথচ কোরআনের সিজদা হলো হৃদয়ের এবং দায়িত্বের,।
যেখানে সূর্যও সিজদা করে, চাঁদও সিজদা করে, এমনকি আমাদের দেহের প্রতিটি কোষও সিজদা করে। হৃদয় এক সেকেন্ডের জন্যও থামে না— এটাই তার সিজদা।

বন্ধুগণ!
কোরআন বলে—
“তারা কি দেখেনি— আল্লাহ যা সৃষ্টি করেছেন, তার সবকিছুর ছায়া ডান ও বাম দিকে পড়ে, আল্লাহর জন্য সিজদা করে, বিনম্রভাবে!” ৮৪ঃ৬১
দেখো— ছায়াও সিজদা করছে। মাটি, পানি, গাছ— সবাই তাদের প্রাকৃতিক নিয়ম মানছে। শুধু মানুষই তার দায়িত্ব ভুলে যাচ্ছে!

বন্ধুগণ!
আমরা সালাত শব্দটি শুনলেই নামাজেট কল্পনা করি। কিন্তু কোরআনে সালাত এসেছে ص ل و মূল শব্দ থেকে— যার মানে হলো সংযোগ, দায়িত্ববোধ, ধারাবাহিকতা। সালাত মানে শুধু দাঁড়ানো-রুকু-সিজদা নয়; বরং জীবনকে আল্লাহর সঙ্গে যুক্ত করা।

কোরআন বলছে—
وَأَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي (طه 20:14)
“আমার স্মরণের জন্য সালাত কায়েম করো।”
অর্থাৎ, সালাত মানে আল্লাহকে মনে রাখা সবসময়— শুধু পাঁচ মিনিট নয়, পুরো ২৪ ঘণ্টা।

বন্ধুগণ!
চলো একটু বিজ্ঞান দেখে নেই— তোমার দেহ কি কখনো সালাত বন্ধ করে? হৃদয় থেমে গেলে তুমি মারা যাবে। শ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে শেষ হয়ে যাবে। কোষের ডিএনএ যদি নিয়ম ভেঙে ফেলে— তোমার শরীরে ক্যান্সার হবে।
প্রকৃতি যদি দায়িত্ব ভাঙে— সূর্য যদি না ওঠে, নদী যদি না বয়ে চলে— তোমার জীবনো শেষ হয়ে যায়। তাহলে মানুষ কেন দায়িত্ব ভাঙে? কেন মিথ্যা বলে, অন্যায় করে, ঘুষ খায়— অথচ ভাবে সে একজন নামাজি?

বন্ধুগণ!
কোরআন সতর্ক করেছে—
فَوَيْلٌ لِلْمُصَلِّينَ . الَّذِينَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ (الماعون 107:4-5)
“ধ্বংস তাদের জন্য যারা সালাত পড়ে, অথচ তারা তাদের সালাত থেকে গাফিল।” সুরা মাউন ৪-৫

লক্ষ করো— এখানে বলা হয়নি, যারা সালাত পড়ে না; বরং যারা পড়ে, কিন্তু দায়িত্বহীন হয়ে পড়ে। এরা বাহ্যিক রিচুয়াল করে, কিন্তু অভ্যন্তরের ন্যায়নিতি হারায়।

বন্ধুগণ!
দেখো— কোরআন আবার বলে—
إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنكَرِ (العنكبوت 29:45)
“সালাত মানুষকে অশ্লীলতা ও অন্যায় থেকে বিরত রাখে।”

যদি তোমার সালাত তোমাকে মিথ্যা, অন্যায়, লোভ থেকে বিরত না রাখে— তবে সেটা আসল সালাত নয়।

বন্ধুগণ!
আজ মুসলিম সমাজে এক বিপর্যয়— মসজিদের মধ্যে আমরা নামাজ পড়ি, বাইরে এসে অন্যায় করি।
নামাজ পড়ি, কিন্তু ঘুষও খাই;
নামাজ পড়ি, কিন্তু মিথ্যাও বলি;
নামাজ পড়ি, কিন্তু ন্যায়বিচার করি না। কোরআনিক সালাত এ বিভাজন ভাঙে।

বন্ধুগণ!
একটি উদাহরণ দিই— এক ব্যবসায়ী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, কিন্তু মিথ্যা বলে লাভ করে। আরেক ব্যবসায়ী নামাজ পড়ে না, কিন্তু সৎ থাকে, কাউকে ঠকায় না। কোরআনের মানদণ্ডে কার সালাত গ্রহণযোগ্য? যে সৎ থেকেছে, দায়িত্ব পালন করেছে— সেটিই আসল সালাত।

বন্ধুগণ!
কোরআন সালাতকে সবসময় সমাজের দায়িত্বের সঙ্গে যুক্ত করেছে। যেমন—

وَالَّذِينَ هُمْ عَلَى صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ . وَفِي أَمْوَالِهِمْ حَقٌّ مَّعْلُومٌ . لِّلسَّائِلِ وَالْمَحْرُومِ (المعارج 70:23-25)
“যারা তাদের সালাত রক্ষা করে; আর যাদের সম্পদে নির্ধারিত অধিকার রয়েছে— ভিক্ষুক ও বঞ্চিতের জন্য।”

মানে— সালাত যদি দরিদ্রের প্রতি দায়িত্ব না শেখায়, তবে সেটি সালাত নয়।

বন্ধুগণ!
একটু কল্পনা করো— গাছ যদি অক্সিজেন দেওয়া বন্ধ করে দেয়, মৌমাছি যদি ফুলে না যায়, সূর্য যদি উদয় না হয়— পৃথিবী ভেঙে পড়বে। ঠিক তেমনি, মানুষ দায়িত্ব পালন বন্ধ করলে সমাজ ভেঙে পড়ে। আজকের দুর্নীতি, যুদ্ধ, বৈষম্য— এসবই মানুষের সালাত নষ্ট হওয়ার ফল।

বন্ধুগণ!
সুতরাং বুঝতে হবে— আল্লাহ কপাল চান না; আল্লাহ দায়িত্ব চান। তিনি খুঁজছেন মাটির সিজদা নয়, হৃদয়ের সিজদা। তিনি খুঁজছেন এমন মানুষ, যে মসজিদে নয়, জীবনেই ইবাদত করে।

বন্ধুগণ!
মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় প্রতারণা কী জানো? সে ভাবে— সালাত মানে শুধু নামাজ পড়ে ফেলা। অথচ কোরআন বারবার চিৎকার করে বলছে— সালাত মানে দায়িত্বশীল জীবন। আল্লাহ বলছেন—
وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا (طه 20:132)
“তোমার পরিবারকে সালাতের আদেশ দাও এবং এতে দৃঢ়ভাবে অটল থাকো।”

দেখো— এখানে কোথাও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় উল্লেখ নেই; বলা হয়েছে— পরিবারকে দায়িত্ব শেখাও, আর তাতে স্থির থেকো।

বন্ধুগণ!
আজ আমরা সালাতকে মসজিদের মধ্যে বন্দী করেছি। অথচ কোরআনিক সালাত সীমাহীন— এটি ঘরে, রাস্তায়, অফিসে, মাঠে; এমনকি তোমার একাকী চিন্তাতেও। তুমি যদি রাস্তায় পড়ে থাকা এক বৃদ্ধকে সাহায্য করো— সেটি সালাত। তুমি যদি কাউকে ঠকানোর সুযোগ পেয়েও না ঠকাও— সেটি সালাত।

বন্ধুগণ!
একটু বিজ্ঞানের উদাহরণ দিই— পৃথিবী যদি সূর্যের চারপাশে তার কক্ষপথ থেকে এক ডিগ্রি সরে যায়, কী হবে জানো? হয়তো জমে বরফ হবে, অথবা আগুনে পুড়ে যাবে। এই নির্ভুল পথ মেনে চলাই হলো পৃথিবীর সালাত। এখন ভাবো— মানুষ যদি তার নৈতিক পথ থেকে সরে যায়, কী বিপর্যয় নেমে আসে? দুর্নীতি, যুদ্ধ, অবিচার— যা আমরা আজ দেখছি।

বন্ধুগণ!
কোরআন বলছে—
إِنَّ الصَّلَاةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَّوْقُوتًا (النساء 4:103)
“সালাত মুমিনদের জন্য নির্ধারিত দায়িত্ব।”

মানুষ ভাবে— এই আয়াতে নামাজের সময় বোঝানো হয়েছে। কিন্তু আসলে বোঝানো হয়েছে— দায়িত্বের নির্ধারিততা। যেমন সূর্যের সময় নির্ধারিত, নদীর প্রবাহ নির্ধারিত— তেমনি তোমার দায়িত্বও নির্ধারিত।

বন্ধুগণ!
একটি গ্রাম কল্পনা করো— সেখানে সবাই নামাজ পড়ে, কিন্তু মিথ্যা বলে, ঘুষ খায়, অন্যায় করে। আরেকটি গ্রাম কল্পনা করো— কেউ নামাজ পড়ে না, কিন্তু সবাই সৎ, দায়িত্বশীল, ন্যায়পরায়ণ। কোরআনিক মানদণ্ডে কোন গ্রাম আল্লাহর কাছাকাছি? দ্বিতীয়টি। কারণ আল্লাহ চরিত্র দেখেন, মেকানিক্যাল রিচুয়াল নয়।

বন্ধুগণ!
আমরা কোরআন পড়ি কিন্তু বুঝি না। কোরআন বলছে—
الَّذِينَ هُمْ عَلَى صَلَاتِهِمْ دَائِمُونَ (المعارج 70:23)
“যারা তাদের সালাতে স্থায়ী।”

এখানে কি বলা হয়েছে পাঁচ ওয়াক্তের কথা? না। বলা হয়েছে— সারাজীবনের দায়িত্বে স্থায়ী থাকা। কৃষক তার ক্ষেতে সৎ, শিক্ষক তার ক্লাসে ন্যায়পরায়ণ, ডাক্তার তার রোগীর প্রতি মানবিক— এরা সবাই সালাতে।

বন্ধুগণ!
মনে রেখো— কোরআনিক সালাত হলো স্মরণ। তুমি যদি আল্লাহকে মনে রেখেই সিদ্ধান্ত নাও— কারও ক্ষতি করবে না, সত্য বলবে, ন্যায় করবে— সেটি সালাত। নামাজ পড়েও যদি মনে থাকে টাকা, রাজনীতি, স্বার্থ— তবে সেটি সালাত নয়।

বন্ধুগণ!
একটি বাস্তব উদাহরণ দিই— একজন মা সন্তানকে দুধ খাওয়াচ্ছে। সে ঘুমায়নি, খায়নি, শুধু সন্তানের জন্য ব্যস্ত। সে কি সালাতে আছে? হ্যাঁ। কারণ সে তার দায়িত্ব পালন করছে। আরেকজন মানুষ মসজিদে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ছে, কিন্তু বাইরে বের হয়ে প্রতিবেশীর প্রতি অন্যায় করছে— সে কি সালাতে আছে? না।

বন্ধুগণ!
কোরআন বলছে—

وَاسْجُدْ وَاقْتَرِبْ (العلق 96:19)
“সিজদা কর এবং কাছে আস।”

কোন কাছে? আল্লাহর কাছে। আর আল্লাহর কাছে আসা মানে তাঁর নিয়মের কাছে আসা। যদি তুমি সিজদা করেও অন্যায়ের নিয়মে বাঁচো— তুমি আল্লাহর কাছে গেলে না।

বন্ধুগণ!
বিজ্ঞান বলে— প্রকৃতির সবকিছুই নিয়মে বাঁধা। মৌমাছির চাক, পিঁপড়ের সারি, পাখির মাইগ্রেশন— সবাই দায়িত্ব মেনে চলে। কিন্তু মানুষই একমাত্র প্রাণী, যে নিয়ম ভেঙে চলে। তাই মানুষের জন্যই কোরআন এসেছে— তাকে দায়িত্ব শেখাতে।

বন্ধুগণ!
আজ আমরা সালাতের রূপ নিয়েছি, সারবস্তু হারিয়েছি। আমরা রুকু করি, সিজদা করি— কিন্তু অন্তর আল্লাহর কাছে নত হয় না। আমরা কোরআন পড়ি— কিন্তু জীবনে তা বাস্তবায়ন করি না। তাই সমাজে দুর্নীতি, অন্যায়, অশান্তি।

বন্ধুগণ!
একটু কল্পনা করো— তুমি গাড়ি চালাচ্ছো, লাল বাতি জ্বললো, তুমি থামলে না— কী হবে? দুর্ঘটনা। ঠিক তেমনি— সালাতের দায়িত্ব উপেক্ষা করলে জীবনে দুর্ঘটনা ঘটে। অন্যায়ের ফল একদিন ফিরে আসে— সমাজে, জীবনে, ইতিহাসে।

বন্ধুগণ!
কোরআন চায়— জীবনের প্রতিটি কাজকে ইবাদত বানাতে। তুমি যদি মায়ের সেবা করো— ইবাদত। তুমি যদি সত্য বলো— ইবাদত। তুমি যদি ন্যায়বিচার করো— ইবাদত। এমনকি তুমি যদি কাউকে হাসাও— সেটাও ইবাদত, যদি তা দায়িত্ববোধ থেকে হয়।

বন্ধুগণ!
একটি আয়াত শোনো—
وَاذْكُرِ اسْمَ رَبِّكَ وَتَبَتَّلْ إِلَيْهِ تَبْتِيلًا (المزمل 73:8)
“তোমার প্রতিপালকের নাম স্মরণ করো এবং সম্পূর্ণভাবে তাঁর দিকে একাগ্র হও।”

এটাই আসল সালাত— একাগ্রতা। মন, শরীর, জীবন— সব দিয়ে দায়িত্ব পালন।

বন্ধুগণ!
আজ আমরা মনে করি— নামাজ পড়লে সব হয়ে গেল। অথচ কোরআন বলে— যদি চরিত্র না বদলায়, তবে নামাজ অর্থহীন। সত্যিই যদি আমরা কোরআনিক সালাত কায়েম করতাম— সমাজে আর অন্যায় থাকতো না, ঘুষ থাকতো না, যুদ্ধ থাকতো না।

বন্ধুগণ!
মনে রেখো— আল্লাহ শব্দ চান না; আচরণ চান। তিনি কপাল চান না; হৃদয় চান। তিনি মাটির সিজদা চান না; জীবনের সিজদা চান।

বন্ধুগণ!
একটু গভীরভাবে ভেবে দেখো — কেন কোরআনে বারবার বলা হয়েছে “তারা সবাই আল্লাহর জন্য সিজদা করে”? শুধু মানুষ নয় — সূর্য, চাঁদ, তারা, গাছ, পাহাড়, পাখি, এমনকি ছায়াও! আল্লাহ বলছেন —

وَلِلَّهِ يَسْجُدُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مِن دَابَّةٍ وَالْمَلَائِكَةُ وَهُمْ لَا يَسْتَكْبِرُونَ (النحل 16:49)
“আকাশ ও পৃথিবীর সব জীব এবং ফেরেশতারা আল্লাহর জন্য সিজদা করে, আর তারা অহংকার করে না।”

অহংকারহীনতা — এটাই সিজদার মূল। গাছ অক্সিজেন দেয়, কখনো বলে না — ‘আমি দিচ্ছি’। সূর্য আলো দেয়, বলে না — ‘আমাকে ধন্যবাদ দাও’। অথচ মানুষ নামাজ পড়েও অহংকারী হয়ে যায় — “আমি পাঁচ ওয়াক্ত পড়ি!” — এটা কেমন সিজদা?

বন্ধুগণ!
সালাত আসলে বিনয়ের শিক্ষা। কোরআন বলছে —

قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ . الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ (المؤمنون 23:1-2)
“সফল তারা, যারা তাদের সালাতে বিনয়ী।”

এখানে বিনয় মানে দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করা নয়; বরং জীবনের প্রতিটি দায়িত্বে বিনয়ী থাকা। যেমন — মা সন্তানের জন্য ত্যাগ করে, কৃষক জমিতে ঘাম ঝরায়, ডাক্তার রোগীর সেবা করে — তারা খুশুতে আছে।

বন্ধুগণ!
আমাদের সমস্যা হলো — আমরা সালাতকে পাঁচ মিনিটের রিচুয়ালে সীমাবদ্ধ করেছি। কিন্তু কোরআন সালাতকে বানিয়েছে পূর্ণ জীবনচর্চা। যেমন নদী ২৪ ঘণ্টা বয়ে চলে, হৃদয় ২৪ ঘণ্টা স্পন্দিত হয় — সালাতও তেমনি ২৪ ঘণ্টার দায়িত্ব।

বন্ধুগণ!
একটু বিজ্ঞানের উদাহরণ দিই — পৃথিবী যদি তার অক্ষ থেকে সামান্য হেলে যায়, ঋতু বদলে যায়, জীবন বিপন্ন হয়। সূর্য যদি এক মুহূর্তের জন্যও আলো না দেয়, সব জমে যায়। ঠিক এভাবেই মানুষ যদি তার নৈতিক সালাত — দায়িত্ব, সততা, ন্যায় — হারায়, সমাজে অন্ধকার নামে। আজ আমরা সেই অন্ধকারে বাস করছি।

বন্ধুগণ!
কোরআন আমাদের চ্যালেঞ্জ করেছে —

أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ (المؤمنون 23:115)
“তোমরা কি ভেবেছো, আমরা তোমাদের উদ্দেশ্যহীনভাবে সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমাদের কাছে ফিরে যাবে না?”

যে জীবন উদ্দেশ্যহীন, যে কাজ দায়িত্বহীন — তা আসলে সালাতহীন জীবন।

বন্ধুগণ!
দেখো, আমরা কত সহজে সালাতের মূল হারিয়েছি। আমরা নামাজ পড়ি, কিন্তু বাজারে ঠকাই; আমরা রোজা রাখি, কিন্তু মিথ্যা বলি; আমরা হজ করি, কিন্তু ন্যায়বিচার করি না। কোরআন এমন সালাতকে ধিক্কার দিয়েছে।

فَوَيْلٌ لِلْمُصَلِّينَ . الَّذِينَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ (الماعون 107:4-5)
“ধ্বংস তাদের জন্য, যারা সালাত পড়ে অথচ তাদের সালাত থেকে গাফিল।”

বন্ধুগণ — কপাল ঠেকানো সহজ; কিন্তু দায়িত্ব পালন কঠিন। আল্লাহ কপাল চান না; দায়িত্ব চান।

বন্ধুগণ!
একটু বাস্তব উদাহরণ — এক ডাক্তার নামাজ পড়ে, কিন্তু রোগীকে অবহেলা করে। আরেক ডাক্তার নামাজ পড়ে না, কিন্তু রোগীর জন্য রাত জাগে। কোরআনিক মানদণ্ডে কার সালাত গ্রহণযোগ্য? যে দায়িত্বশীল — কারণ সেটাই আসল সিজদা।

বন্ধুগণ!
সালাত মানে আল্লাহকে স্মরণ। কোরআন বলছে —

وَأَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي (طه 20:14)
“আমার স্মরণের জন্য সালাত কায়েম করো।”

তুমি যদি নামাজ পড়ে ব্যবসায় মিথ্যা বলো — তোমার সালাত কোথায়? তুমি যদি নামাজ পড়ে প্রতিবেশীর হক না দাও — তোমার সালাত কোথায়?

বন্ধুগণ!
আমরা মাটিতে সিজদা করি, অথচ অন্তরে অহংকার জমে। আমরা রুকু করি, অথচ জীবনে অন্যায়ের কাছে মাথা নত করি। সত্যিকারের সিজদা হলো — অন্যায়ের সামনে না ঝুঁকে সত্যের কাছে নত হওয়া।

বন্ধুগণ!
একটু কল্পনা করো — যদি মৌমাছি মধু না আনে, গাছ ফল না দেয়, সূর্য আলো না দেয় — পৃথিবী টিকে থাকবে? না। কিন্তু তারা দায়িত্ব ভুলে না। কেবল মানুষই দায়িত্ব ভুলে যায়। তাই কোরআন মানুষের জন্য অবতীর্ণ হয়েছে — তাকে সালাত শেখাতে।

বন্ধুগণ!
কোরআন বলছে —
وَالَّذِينَ هُمْ عَلَى صَلَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ (المعارج 70:34)
“যারা তাদের সালাত রক্ষা করে।”

রক্ষা মানে কী? কেবল সময় মেনে নামাজ পড়া নয়; বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে দায়িত্ব রক্ষা করা। সত্য রক্ষা করা, ন্যায় রক্ষা করা, মানবতা রক্ষা করা।

বন্ধুগণ!
আজ আমরা যে বিপর্যয়ে — যুদ্ধ, দুর্নীতি, বৈষম্য — সবই এসেছে সালাত ভেঙে পড়ার কারণে। আমরা রিচুয়াল করেছি, কিন্তু দায়িত্ব হারিয়েছি। যদি আমরা আবার কোরআনিক সালাত কায়েম করি — সমাজ বদলে যাবে।

বন্ধুগণ!
মনে রেখো — আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বড় সিজদা হলো ন্যায়ের সিজদা। সবচেয়ে বড় সালাত হলো মানবতার সালাত। সবচেয়ে বড় ইবাদত হলো দায়িত্বের ইবাদত

বন্ধুগণ!
তুমি কি জানো— কোরআনে সিজদা ও সালাতের কথা কেবল মানুষের জন্য নয়; সব সৃষ্টির জন্য এসেছে। পিঁপড়ার সারি, মৌমাছির চাক, তারা, পাহাড় — সবাই সালাত করছে, সিজদা করছে। একমাত্র মানুষই দায়িত্ব ভুলে যায়। আল্লাহ বলছেন —

أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يَسْجُدُ لَهُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَمَن فِي الْأَرْضِ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ وَالنُّجُومُ وَالْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَابُّ وَكَثِيرٌ مِّنَ النَّاسِ (الحج 22:18)
“তুমি কি দেখনি— আকাশ ও পৃথিবীর যা কিছু আছে, সূর্য, চাঁদ, তারা, পাহাড়, গাছ, জীবজন্তু এবং অনেক মানুষ আল্লাহর জন্য সিজদা করে?”

তাহলে তুমি একা সিজদা করছ না — তুমি অংশ নিচ্ছ মহাবিশ্বের এক বিশাল ইবাদতে।

বন্ধুগণ!
বিজ্ঞান বলে— আমাদের দেহে ৩৭ ট্রিলিয়ন কোষ আছে। প্রতিটি কোষ নির্দিষ্ট নিয়মে কাজ করছে। যদি একটিও কোষ দায়িত্ব ভাঙে, রোগ হয়। ক্যান্সার আসলে কোষের দায়িত্বভ্রষ্টতা। বুঝলে? মহাবিশ্বের প্রতিটি সিজদা মানে দায়িত্বশীলতা। তুমি দায়িত্ব ভাঙলেই বিশৃঙ্খলা শুরু হয়।

বন্ধুগণ!
আমরা ভাবি— নামাজ পড়ে আল্লাহ খুশি হবেন। কিন্তু কোরআন বলছে— আল্লাহ চান তোমার ন্যায়, সততা, দায়িত্ব। যদি তুমি নামাজ পড়ে অন্যায়ের পাশে দাঁড়াও, তবে আল্লাহর কাছে তুমি কিছুই করলে না। আল্লাহ বলছেন —

إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ وَالإِحْسَانِ وَإِيتَاءِ ذِي الْقُرْبَى وَيَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنكَرِ وَالْبَغْيِ (النحل 16:90)
“নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়, উৎকর্ষ ও আত্মীয়কে দান করার আদেশ দেন, আর অশ্লীলতা, অন্যায় ও সীমালঙ্ঘন থেকে বিরত করেন।”

দেখো— নামাজের কথা নেই, সালাতের কথা নেই। বলা হয়েছে— ন্যায় করো। এটাই আসল সালাত।

বন্ধুগণ!
একটু বাস্তব উদাহরণ — এক মা সন্তানকে রাতভর জাগিয়ে রাখে, ওষুধ খাওয়ায়, দুধ খাওয়ায়, নিজের ঘুম বিসর্জন দেয়। সে কি মসজিদে? না। কিন্তু সে সালাতে আছে। কারণ সে দায়িত্ব পালন করছে। আরেকজন মসজিদে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ে, অথচ স্ত্রী-সন্তানের হক আদায় করে না — সে আসলে সালাতে নেই।

বন্ধুগণ!
আজ আমাদের দরকার সালাতের বিপ্লব। মসজিদ-কেন্দ্রিক সালাত নয়; জীবন-কেন্দ্রিক সালাত। শুধু কপালের সিজদা নয়; হৃদয়ের সিজদা। শুধু সময়ের নামাজ নয়; দায়িত্বের নামাজ।

বন্ধুগণ!
কোরআন বলে —

قُمِ اللَّيْلَ إِلَّا قَلِيلًا . نِصْفَهُ أَوِ انقُصْ مِنْهُ قَلِيلًا . أَوْ زِدْ عَلَيْهِ وَرَتِّلِ الْقُرْآنَ تَرْتِيلًا (المزمل 73:2-4)
“রাত জেগে দাঁড়াও, অল্প সময় বাদে; অর্ধেক রাত, বা তার থেকে কিছু কম বা বেশি; এবং কোরআন ধীরে ধীরে পাঠ করো।”

এ আয়াত শুধু নামাজ শেখাচ্ছে না — শেখাচ্ছে ধ্যান, একাগ্রতা, দায়িত্ব পুনর্নির্ধারণ। রাত হলো আত্মার সিজদার সময়, যেখানে মানুষ নিজেকে পরিশুদ্ধ করে।

বন্ধুগণ!
একটু ভাবো — যদি আমরা সত্যিকার অর্থে সালাত বুঝতাম:

• শিক্ষক হতো নিষ্ঠাবান;

• ব্যবসায়ী হতো সৎ;

• রাজনীতিবিদ হতো ন্যায়পরায়ণ;

• বাবা-মা হতো দায়িত্বশীল;

• সন্তান হতো কৃতজ্ঞ।

তাহলে কি সমাজে অন্যায় থাকতো? ঘুষ থাকতো? দুর্নীতি থাকতো? যুদ্ধ থাকতো? না!

বন্ধুগণ!
আজ আমাদের বিপ্লব লাগবে। বিপ্লব হবে সিজদার — দায়িত্বের বিপ্লব, ন্যায়ের বিপ্লব। যেখানে প্রতিটি মানুষ তার কাজকে ইবাদত মেনে করবে। কৃষক ফসল ফলাবে ইবাদত ভেবে; শ্রমিক ঘাম ঝরাবে ইবাদত ভেবে; ডাক্তার সেবা দেবে ইবাদত ভেবে; সন্তান মায়ের সেবা করবে ইবাদত ভেবে। এটাই হবে কোরআনিক সমাজ।

বন্ধুগণ!
সালাত মানে শুধু মসজিদে পাঁচ মিনিট নয় — সালাত মানে ২৪ ঘণ্টা জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত। রাস্তা পার হওয়া, ব্যবসা করা, সন্তান লালন করা — সবই সালাত, যদি তা দায়িত্বশীলভাবে করা হয়।

বন্ধুগণ!
শেষে আমি আহ্বান জানাই — এসো, কোরআনিক সালাত কায়েম করি। মাটির সিজদা নয় — জীবনের সিজদা। নামের ইবাদত নয় — কাজের ইবাদত। বাহ্যিক নামাজ নয় — অন্তরের দায়িত্ব।

বন্ধুগণ!
আমরা বলবো —

رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ (البقرة 2:127)
“হে আমাদের প্রভু! আমাদের থেকে গ্রহণ করুন; নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।”

বন্ধুগণ!
তুমি যখন নিজের দায়িত্ব পালন করবে, মানুষকে ভালোবাসবে, অন্যায় থেকে দূরে থাকবে — তখন প্রতিটি শ্বাস হবে তোমার সালাত, প্রতিটি কাজ হবে তোমার সিজদা। তখন মাটি আর কপালের দরকার পড়বে না — কারণ পুরো জীবনই হবে আল্লাহর সামনে নত।

(তথ্যসুত্র সমুহ)

‎আমার আলোচনায় ব্যবহৃত বা ইঙ্গিত করা আয়াতগুলো:

‎1. الرعد 13:15 — আসমান-জমিনের সবকিছু আল্লাহর জন্য সিজদা করে।

‎2. الحج 22:18 — সূর্য, চাঁদ, তারা, পাহাড়, গাছ, জীবজন্তু এবং মানুষ সিজদা করে।

‎3. النحل 16:49 — আসমান-জমিনের জীব ও ফেরেশতারা অহংকারহীনভাবে সিজদা করে।

‎4. طه 20:14 — “আমার স্মরণের জন্য সালাত কায়েম করো।”

‎5. طه 20:132 — পরিবারকে সালাতের নির্দেশ দাও এবং স্থির থাকো।

‎6. الماعون 107:4-5 — “ধ্বংস তাদের জন্য যারা সালাত পড়ে, অথচ গাফিল।”

‎7. العنكبوت 29:45 — সালাত মানুষকে অশ্লীলতা ও অন্যায় থেকে বিরত রাখে।

‎8. المعارج 70:23-25, 34 — সালাত রক্ষা করা এবং সম্পদে গরিবের হক দেওয়া।

‎9. المؤمنون 23:1-2, 115 — সফল মুমিনরা সালাতে বিনয়ী হয়; মানুষ উদ্দেশ্যহীন নয়।

‎10. العلق 96:19 — “সিজদা করো এবং কাছে আসো।”

‎11. النحل 16:90 — আল্লাহ ন্যায়, উৎকর্ষ, দান করতে বলেন; অন্যায় ও অশ্লীলতা থেকে নিষেধ করেন।

‎12. البقرة 2:127 — “হে আমাদের প্রভু! আমাদের থেকে কবুল করুন।”

‎13. المزمل 73:2-4, 8 — রাতের কিয়াম, কোরআন তিলাওয়াত, একাগ্রতা।

‎14. النساء 4:103 — সালাত মুমিনদের জন্য নির্ধারিত দায়িত্ব।

‎---
‎🔹 হাদীস (সম্পূরক তথ্যসূত্র)
‎সাহিহ বুখারি, সাহিহ মুসলিম:
‎“সালাত হলো দ্বীনের স্তম্ভ।”
‎“সালাত মানুষকে অশ্লীলতা ও অন্যায় থেকে বিরত রাখে।” (হাদিস দ্বারা আয়াতের ব্যাখ্যা)

‎মুসনাদ আহমাদ: রাসূল ﷺ বলেছেন— “যার সালাত তাকে অন্যায় থেকে বিরত রাখে না, তার সালাতের কোনো মর্যাদা নেই।”
‎---

‎🔹 ভাষাতাত্ত্বিক সূত্র
‎লিসানুল আরব ও মুফরাদাতুল কোরআন (রাগিব ইসফাহানি):

‎"صلاة" (সালাত) শব্দের মূল صلو থেকে এসেছে— যার অর্থ সংযোগ, দোয়া, ধারাবাহিকতা।

‎তাফসির ইবনে কাসীর, তাফসির কুরতুবি:
‎সিজদা কেবল কপাল ঠেকানো নয়, বরং আনুগত্য ও দায়িত্ব পালনও বোঝায়।
‎---

‎🔹 বিজ্ঞানভিত্তিক ইঙ্গিত
‎1. জ্যোতির্বিজ্ঞান — মহাবিশ্বের গ্রহ-নক্ষত্র নির্দিষ্ট কক্ষপথে চলছে (সূরা আম্বিয়া 21:33)।

‎2. জীববিজ্ঞান — মানুষের শরীরের কোষের দায়িত্বভ্রষ্টতা হলে ক্যান্সার হয়।

‎3. পদার্থবিজ্ঞান — পৃথিবী সূর্যের চারপাশে সুনির্দিষ্ট কক্ষপথে চলছে; সামান্য বিচ্যুত হলে জীবন বিপন্ন।
‎---

‎🔹 বই/প্রবন্ধ (ধর্ম ও সমাজবিজ্ঞানভিত্তিক)
‎আবুল কালাম আজাদ, তাফসিরুল কোরআন — সালাতের সামাজিক তাৎপর্য।

‎সাইয়েদ কুতুব, ফি জিলালিল কোরআন — সালাতের ব্যাখ্যা।

‎আবুল আ'লা মওদূদী, তাফহিমুল কোরআন — সালাত ও সামাজিক দায়িত্ব।

‎ড. ইসমাইল রাজী আল-ফারুকী, Islam and Culture — ইবাদত মানে জীবনব্যাপী দায়িত্ব।

‎---
‎প্রধান তথ্যসূত্র: কোরআনুল কারীম
‎সহায়ক তথ্যসূত্র: সহিহ হাদীস, তাফসির গ্রন্থ, আরবি লেক্সিকন, আধুনিক বিজ্ঞান ও ইসলামী চিন্তাবিদদের রচনা।

Post a Comment

0 Comments