Subscribe Us

f

“সৌদি-ওহাবি আঁতাত: ইসলামের বুকে এক কালো চুক্তির ইতিহাস”

 


“সৌদি-ওহাবি আঁতাত: ইসলামের বুকে এক কালো চুক্তির ইতিহাস”

আলোচনায়ঃ- মাহাতাব আকন্দ

বন্ধুগণ!
আজ আমরা ফিরছি ইতিহাসের সেই সন্ধিক্ষণে,
যেখানে ধর্মের নামে রাজনীতি
আর রাজনীতির নামে ধর্মকে বন্দী করা হয়েছিল।
আজ আমরা উন্মোচন করবো সেই ষড়যন্ত্রের পর্দা—
যেখানে ইসলামের খোলসে ঢুকে পড়ে কিছু মুখোশধারী লোক
ইসলামের কলিজায় ছুরি বসিয়েছিল।

বন্ধুগণ!
মঞ্চে ছিল দুই জন—
একজন রাজপিপাসু উপজাতি নেতা,
আরেকজন ছিল এক আত্মম্ভরী ধর্মগুরু শায়েখ।
নামের দিক থেকে ছিল তারা ইসলামিক—
মুহাম্মদ ইবনে সউদ এবং মুহাম্মদ ইবন আব্দুল ওহহাব।
কিন্তু কাজের দিক থেকে?
ইসলামের বুকে বিষ ঢেলে দেওয়া দুই জন চুক্তিবদ্ধ অপরাধী!
১৭৪৪ সালের সেই চুক্তি ছিল না শুধু রাজনৈতিক জোট—
তা ছিল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘোষিত বিদ্রোহ!

বন্ধুগণ!
মুহাম্মদ ইবনে সউদ ছিল দরিদ্র ও দুর্বল দিরইয়্যাহর এক স্থানীয় প্রধান।
হাতে সামান্য ক্ষমতা, আর চোখে ছিলো রাজ্য বিস্তারের লোভ।
আর ইবন আব্দুল ওহহাব ছিল বিতাড়িত, ও
বিতর্কিত ধর্মগুরু—
যার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই
নাজদের বিভিন্ন জনপদে ফতোয়া জারি হয়েছিল!
তারা দুইজন মিলেছিল স্বার্থে।
ইবন সউদের দরকার ছিল ধর্মীয় বৈধতা,
আর ইবন ওহহাবের দরকার ছিল সশস্ত্র বাহিনী।

বন্ধুগণ!
এই আঁতাতের মূল ঘোষণা ছিল এমন:-
“রাজ্য হবে ইবনে সউদের, ধর্ম হবে ইবনে ওহহাবের।”
মানে? একজন রাজনৈতিক খলনায়ক,
আরেকজন ধর্মীয় বটগাছ—
এই দুইয়ে মিলে সৃষ্টি হলো তলোয়ার ও তাকফিরের যুগ!

বন্ধুগণ!
তাদের হাত ধরে ইসলামের নামে শুরু হলো মুসলমান হত্যার নতুন দিগন্ত!
যাকে তারা তাদের আকিদা মতে ভুল মনে করতো,
তাকেই তারা বলতো “কাফের”!
শুরু হলো তাকফিরি ফতোয়ার বন্যা—
মালিকি, হানাফি, সুফি, আশআরি—সবাই কাফের!
হত্যা, লুট, দখল, নারীদের বন্দী করে বিক্রি ।
—সব কিছু করেও তারা বলতো—“এটাই জিহাদ!”

বন্ধুগণ!
এই আন্দোলন ছিল না ইলমের উপর ভিত্তি করে,
ছিল না কুরআনের আলোয়,
বরং ছিল এক উগ্র চরমপন্থার জোয়ার।
তাদের হাতে ছিল কুঠার, মুখে কুরআনের ছায়া,
অথচ অন্তরে ছিল ফিতনা!
তারা বলতো, “আমরাই তাওহীদের সঠিক রূপ”,
অথচ তারা ভুলে যেত-
"লা ইকরাহা ফিদদীন" ধর্মে কোন জবরদস্তি নেই।
(সূরা বাকারা ২:২৫৬)

বন্ধুগণ!
এই দখলদারী শুরুতে স্থানীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ ছিল না।
তারা একে একে হামলা চালায় আশেপাশের মুসলিম গ্রামগুলোতে।
কাতিফ, হাফর, হায়িল, হিজাজ—
সব জায়গায় ধ্বংস করে মুসলমানদের ঘরবাড়ি, মসজিদ, এমনকি কবরস্থান পর্যন্ত!
তারা ধ্বংস করে ইমামদের কবর,
আলিমদের মাজার, নারী-শিশুদের করতো বন্দী!
তাদের ভাবখানা এমন,
যেন একমাত্র তারাই মুসলিম—বাকি সবাই “বিদআতী” অথবা “মুশরিক”!

বন্ধুগণ!
সত্যিকারের তাওহীদ কি এমন হয়?
সত্যিকারের ইসলামের পথ কি এভাবে চলে?
না! কুরআন তো বলে,
"وَلَا تَعْتَدُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ"
“অত্যাচার করো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ অত্যাচারকারীদের পছন্দ করেন না।” (সূরা বাকারা ২:১৯০)

বন্ধুগণ!
এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রথম প্রবল প্রতিরোধ আসে তখনকার ইসলামী খেলাফত—
ওসমানীয় সাম্রাজ্য থেকে।
তারা দেখছিলো,
আরবের মধ্যভাগে জন্ম নিচ্ছে এক ভয়ংকর আগুন,
যা ছড়িয়ে পড়ছে মুসলিম জাহানে-
বিভাজন আর ফতোয়ার বিষে আক্রান্ত  মুসলিম উম্মাহ!

বন্ধুগণ!
ওসমানীয়দের কাছে ইসলাম ছিল একতা,
ছিল করুণা।
তারা ওহাবীদের “বিধ্বংসী বাতিলপন্থী” হিসেবে ঘোষণা দেয় এবং অভিযান শুরু করে।
১৮১৮ সালে, মিশরের খলিফা,
মোহাম্মদ আলী পাঠান-
এবং তাঁর পুত্র ইব্রাহিম পাশা—
ওহাবি কেন্দ্র দিরইয়্যাহ দখল করে ধ্বংস করে দেয়।
মুহাম্মদ ইবনে সউদের বংশধররা পালিয়ে যায়।
এক মুহূর্তের জন্য মনে হলো,
ইতিহাসে এই ফিতনা দমন হয়েছে।

কিন্তু ইতিহাস আবার ঘুরে দাঁড়ায়।
ব্রিটিশরা তখন মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের স্বার্থ প্রতিষ্ঠার ফন্দি ফিকিরে ব্যস্ত।
তারা ইসলামি খেলাফতের পতন চায়।
তারা চায় এমন ভুখন্ড যেখানে থাকবে তেল,
আর থাকবে লোকেদের মাঝে বিভক্তি।
সুতরাং তারা সেই পুরনো ঘোড়াকেই আবার চড়িয়ে দেয় মাঠে—
ওহাবি মতাদর্শের পুরনো শক্তিকে ফিরিয়ে এনে,
তারা নতুন এক ‘সৌদি আরব’ তৈরি করে।

বন্ধুগণ!
১৯০২ সালে, ইবনে সৌদ আবার ফিরে আসে নজদে।
(যার বর্তমান নাম রিয়াদ)
ব্রিটিশদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠে নতুন জোট।
তাদের বাহিনী “ইখওয়ান” নামে পরিচিত—
যারা ছিল হিংস্র ও উগ্র চিন্তার ধারক।
তারা চেয়েছিল—“মক্কা-মদিনাও হবে আমাদের রাজত্বের অন্তর্ভুক্ত।”
তাদের সেই চরমপন্থা ছড়াতে থাকে—
যেখানে আলেম নয়,
নিতি চলছিলো জোর যার ন্যায় তার।

বন্ধুগণ!
আজ যারা আহলে হাদীস বা সালাফির নাম নিয়ে চলেন,
তারা কি কখনো এই ইতিহাস স্মরণ করেন?
তারা কি জানেন তাদের রেফারেন্স দেওয়া ওহাবিজম কিভাবে জন্ম নিয়েছিল?
তাদের প্রিয় সৌদি রাজতন্ত্র
কিভাবে জন্ম দিয়েছিল ধর্মব্যবসার এক কর্পোরেট সংস্কৃতিকে?

বন্ধুগণ!
আজ যদি কেউ গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে চেঁচায়, অথচ রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে চুপ থাকে—
জেনে নিন, সে কুরআনের নয়, রাজপরিবারের গোলাম!
কারণ কুরআন বলে,
"وَأَمْرُهُمْ شُورَىٰ بَيْنَهُمْ"
“তাদের সকল কাজ পরামর্শের ভিত্তিতে হয়।” (সূরা শূরা ৪২:৩৮)
রাজতন্ত্র কি কখনো শূরার ভিত্তিতে চলে?

বন্ধুগণ!
এই চুক্তি, এই রাজনীতি, এই ধর্মব্যবসা—
সব মিলিয়ে এটি ইসলামের কলিজায় গাঁথা এক বিষদাঁত।
আর এই দাঁতের নামই হলো: ওহাবি-সৌদি আঁতাত।
এই আঁতাতের ফলেই আজ মুসলিম উম্মাহ শতদলে বিভক্ত।
এই আঁতাতের ফসল হলো মাযহাব বিদ্বেষ,
তাকফির সংস্কৃতি,
বোমা-সন্ত্রাস আর চিন্তার গলা টিপে হত্যা!

বন্ধুগণ!
এই ইতিহাস আমাদের জানতে হবে—বোঝাতে হবে,
নচেৎ ধর্মের নামে আবার কেউ রাজনীতি চালাবে,
আর আমাদের সন্তানদের পাঠাবে ভুল পথে।
যেখানে কুরআনের আলো মুছে দিয়ে
বসানো হবে রাজপরিবারের ব্যানার!

ওহাবী-সৌদি চুক্তি: ইসলামের নামে রাজনীতি ও রক্তপাতে ভেজা ইতিহাস-

বন্ধুগণ!
আমরা যেই ইতিহাসে দাড়িয়ে আছি,
সেখানে রক্তের ছাপ এখনো শুকায়নি।
সেখানে এখনো জ্বলে ওঠে মায়ের কান্না,
ভাইয়ের আর্তনাদ!
সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আজ বলছি—
ইতিহাস শুধু অতীত নয়,
ইতিহাস হলো চলমান ষড়যন্ত্রের রক্তমাখা দলিল!

বন্ধুগণ!
যে মুহাম্মদ ইবন আবদুল ওহহাব বলেছিল,
তাওহীদের জন্য যুদ্ধ করবে,
সে আসলে কাবা ঘরের চাবি তুলে দিয়েছিল মুকুটের লোভে!
তার বাণী ছিল, “শিরক ধ্বংস করো!”
অথচ সে নিজেই এক শাসকের দরবারে শিরকবাজ মোল্লায় পরিণত হয়েছিল!
রাজতন্ত্রের জুতা চাটছিল—ধর্মের মোড়কে।

বন্ধুগণ!
এই ওহহাবী আন্দোলনের ব্যানারে,
মুহাম্মদ ইবনে সউদ নামক এক লোভী শাসকের হাত ধরে,
ইসলামের নামে শুরু হয়েছিল এক নিষ্ঠুর গণহত্যার অভিযান।
ইসলাম যে করুণা, দাওয়াত ও যুক্তির ধর্ম—
সে সৌন্দর্যকে তারা দলিত করেছিল তলোয়ারের নিচে।

বন্ধুগণ!
কিভাবে এক ধর্মীয় স্লোগান দিয়ে
গোটা আরবের হাজারো গোত্রকে হত্যা করা হয়েছিল—সেই গল্প ইতিহাস তারা লুকাতে চায়।
১৭৪৪ সালের সেই পবিত্র সন্ধিক্ষণে তারা যে চুক্তি করেছিল,
তা ছিল এক ভ্রষ্ট ও কুৎসিত চক্রান্ত—
যেখানে ওহহাবের 'তাওহীদ' ছিল রাজতন্ত্রের নিরাপত্তা গ্যারান্টি।

বন্ধুগণ!
মদিনা, তায়েফ, বাগদাদ—এমনকি মক্কার নিরীহ মুসলমানও রক্ষা পায়নি।
তারা বলেছিল, “আমরা মুশরিকদের মুশরিক ও মুরতাদদের হত্যা করছি।”
অথচ যাদের তারা হত্যা করছিল,
তারা সবাই ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলেই মরে যাচ্ছিল!

তাদের জিহাদ ছিল এক রাজত্ব কায়েমের ধোঁকা।
তারা মসজিদে ঢুকে নারীদের পর্যন্ত হত্যা করেছিল,
কারণ তাদের মতে—ওই নারীরা ‘বিদআতি’ ছিল!

বন্ধুগণ!
ইসলাম কি এমন? যে ধর্ম কিতাবে বলে “لا إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ” (দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নেই – সূরা বাকারা: ২৫৬),
সেই ধর্মের নামে তারা বলেছিল,
“আমরা জোর করেই খাঁটি ইসলাম কায়েম করব!”
কুরআনের বিরুদ্ধেই দাঁড়িয়েছিল ওহহাবী তলোয়ার!

তারা ইতিহাসকে ধ্বংস করেছে, ইসলামিক ঐতিহ্যকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। নবীদের কবর মাটির নিচে চাপা দিয়ে বলেছে, “এগুলো শিরকের কেন্দ্র!” অথচ নিজের রাজতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে বিলাসবহুল প্রাসাদ নির্মাণে ব্যস্ত ছিল! এটাই কি তাওহীদের রাজনীতি?

বন্ধুগণ!
তাদের এই নৃশংসতার পেছনে ছিল ব্রিটিশ সমর্থন। হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন! বৃটিশ গোয়েন্দা হামফার স্মৃতিচারণায় লেখা আছে কিভাবে তারা মুহাম্মদ ইবন আবদুল ওহহাবকে প্ররোচিত করেছিল এক ‘নতুন ইসলাম’ প্রচারে।
(Ref: Memoirs of Mr. Hempher, The British Spy to the Middle East)

বন্ধুগণ!
এবং আজো সেই ঘৃণ্য চুক্তির উত্তরাধিকারী হলো সৌদি রাজতন্ত্র।
আজো তারা গদির বিরুদ্ধে কিছু বললে
তাকে ‘খারেজী’ আখ্যা দেয়!
অথচ খারেজী তো ছিল তারাই—
যারা সাহাবাদের রক্ত ঝরিয়েছিল ‘তাওহীদের নামে’!

বন্ধুগণ!
এই রাজতন্ত্র একদিকে ইসলামের রক্ষক সেজে হাজিদের সেবায় ব্যস্ত,
অন্যদিকে ইয়েমেনে শিশু হত্যা করছে,
আর আমেরিকার অস্ত্র চুক্তির মাধ্যমে ইসলাম বিক্রি করছে।
কে বলবে—এটা “আল্লাহর জমিনে খেলাফত”?

বন্ধুগণ!
তারা নিজেদেরকে “খাদিমুল হারামাইন” বলে,
অথচ রসুল (সা.) বলেছিলেন:
«إِنَّمَا الإِمَامُ جُنَّةٌ يُقَاتَلُ مِنْ وَرَائِهِ وَيُتَّقَى بِهِ»
– “ইমাম একজন ঢাল, যার পেছনে লড়া হয়, যার ছায়ায় মানুষ নিরাপদ।” (সহীহ মুসলিম ১৮৪১)
কিন্তু সৌদি শাসকেরা তো ঢাল নয়, তারা নিজেরাই আগুনের উৎস!

এই রাজতন্ত্রের ফতোয়া মেশিন হলো তাদের মদদপুষ্ট ওহহাবি আলেমরা।
যারা কখনো গণতন্ত্রকে কুফর বলে,
আবার রাজতন্ত্রকে “ইলাহী হুকুম” বলে প্রশংসায় ভাসায়।
ইসলামে কি দুই নীতির জায়গা আছে?

বন্ধুগণ!
গণতন্ত্র হৌক বা রাজতন্ত্রই হৌক—
দুটোই যদি আল্লাহর কিতাবের বাইরে হয়,
তবে দুটোই বাতিল।
কিন্তু প্রশ্ন হলো—
ওহহাবীরা শুধু গণতন্ত্রকে কুফর বলে কেন চিৎকার করে?
সৌদি রাজতন্ত্র তো সুদ, ফ্যাশন, নারী-নাচ, জুয়া সবকিছুর প্রশ্রয় দেয়—
তাদের মুখ সেখানে বন্ধ কেন?

বন্ধুগণ!
এই দ্বিচারিতা মুসলিম জাতিকে পঙ্গু করেছে।
আমরা আজ বিভ্রান্ত,
কারণ কেউ বলে “শরীয়া চাই”,
আবার সেই শরীয়ার নামে বাদশাহর গোলামী করে।
তাদের কাছে শরীয়া মানে—
রাজা চাইলেই সব জায়েয,
প্রজার আর কিছু বলার অধিকার নেই!

বন্ধুগণ!
এই মনোবৃত্তি ইসলামের খিলাফ,
এই চেতনা কুরআনের পরিপন্থী।
আল্লাহ বলেন:
"হুকুম চলবে একমাত্র আল্লাহর।
কিন্তু তারা বলে,
“বাদশাহর ফয়সালা আল্লাহর মতোই সম্মানযোগ্য।”
এটাই কি ঈমান?

বন্ধুগণ!
ইতিহাসের এই ছায়া থেকে আজো আমরা বের হইনি। আজো পেট্রো-ডলারের বদৌলতে সৌদি বাদশার দাসত্বকে ইসলামের প্রতীক বানানো হচ্ছে।
আজো “সালাফী” নামে কিছু লোক ইসলামের চেহারা বিকৃত করছে
আর রক্তপাতকে জায়েয বানাচ্ছে।

বন্ধুগণ!
তাদের দাড়ি বড়, কিন্তু মন ছোট।
তাদের কুরআন মুখে, কিন্তু হৃদয়ে লোভ।
তাদের ওয়াজে “তাওহীদ” গর্জে ওঠে,
কিন্তু নীতিতে জড়িয়ে আছে জালিম রাজাদের দাসত্ব।

তাদের ইসলাম,
আসল ইসলামের প্রতিচ্ছবি নয়—
কেবয়ণব
একটি শক্তি কাঠামোর ছদ্মবেশ! যেখানে তাওহীদের নামে চলে আধিপত্য, দাওয়াতের নামে চলে দখল, আর খিলাফতের নামে চলে প্রাসাদ নির্মাণ।

বন্ধুগণ!
আজ সময় এসেছে সত্য বলার, ইতিহাস খুঁড়ে বের করার—কারণ ইতিহাস জানলেই আমরা বুঝতে পারব, কিভাবে ধর্মের নামে সবচেয়ে বড় ধোঁকা দেওয়া হয়েছিল মুসলিম জাতিকে।

এই বিদ্রোহ কেবল কাফিরদের বিরুদ্ধে নয়,
এ বিদ্রোহ সেই ভণ্ড মুসলমানদের বিরুদ্ধেও—
যারা ইসলামকে করে প্রহসন,
কুরআনকে বানায় রাজনীতি আর
নবীর নামে করে ব্যবসা।

বন্ধুগণ!
এই আন্দোলন কুরআনের আলোর,
এই বিদ্রোহ কোনো দলে নয়—
বরং দলভিত্তিক ধর্মকে ভাঙার ঘোষণা।
আজ আমরা ফিরে যাব আল্লাহর একমাত্র হুকুমের দিকে—কুরআনের দিকে।

রক্তে রঞ্জিত হেজাজ, তলোয়ারের তলে তাওহীদ!
বন্ধুগণ!
মুহাম্মদ ইবনে সউদ আর ইবনে আব্দুল ওহাবের গাঁটছড়া কেবল একটি তত্ত্বিক জোট ছিল না, বরং ছিল রাজনীতি ও ধর্মব্যবসার নিষ্ঠুর প্যাকেজ—যেখানে ইসলামের নামে কলেমার মানুষদের রক্তে ভিজেছে আরবের বালু!

তাদের দাওয়াত ছিল “তাওহীদের” নামে,
কিন্তু বাস্তবে সেটা ছিল ভিন্ন মতকে নিধনের আয়োজন।
ওহাবী তত্ত্বে বিশ্বাস না করলেই আপনি কাফের!
আপনি মুশরিক! আপনি হত্যাযোগ্য!
তারা এমন এক ‘তাওহীদ’ বানালো,
যেখানে ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালিক, ইমাম শাফি, ইমাম আহমদের অনুসারীরাও কাফের!
তাদের মাজারে যাওয়া মানেই শিরক! তাদের মতে ওলী-আউলিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা মানেই আল্লাহর সাথে শরীক করা!

বন্ধুগণ!
হঠাৎ করেই মদিনার অলিতে গলিতে ছড়িয়ে পড়ল ওহাবী তলোয়ারের ঝলক।
মসজিদের মিনারে ভেসে উঠলো এক ভিন্ন সুর
—“তাওহীদ তাওহীদ!”
কিন্তু এই তাওহীদের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতা দখল,
জাতিকে দ্বিধা বিভক্ত করা,
ইসলামকে সংকুচিত করা।
ওহাবী বাহিনী একের পর এক শহরে হামলা চালাল—
তাদের প্রথম বড় শিকার হিজাজ অঞ্চলের পবিত্র শহর তায়েফ

বন্ধুগণ!
তায়েফে কী ঘটেছিল জানো?
১৭৮৫ সালে তারা তায়েফ আক্রমণ করলো।
এই শহর ছিল উলামা, শায়খ, সুফি, আর কুরআন চর্চাকারীদের কেন্দ্র।
ওহাবী বাহিনী শহরে ঢুকে মসজিদে নামাজরত মানুষদের কেটে ফেলল,
শিশুদের গলাকাটা হলো, মহিলাদের হত্যা করা হলো,
কুরআনের কপি পুড়িয়ে দিল—
বলল এইসব কিতাব শিরকি কিতাব!
হায় রে! এমন কুৎসিত বিকৃত দাওয়াত যে আল্লাহর কিতাবকেও রেহাই দিল না!

বন্ধুগণ!
এটা কেবল একটি শহরের ঘটনা নয়।
তারা কারবালার শোক পালন করা মানুষদের শিরকবাজ বলত,
অথচ নিজেরা একদল রাজা-বাদশাহর পা চাটায় মগ্ন ছিল।
ওহাবী সেনারা মদিনায় হামলা চালিয়েছিল,
এমনকি এক পর্যায়ে রাসুলের (সা.) রওজা মোবারক ভেঙে ফেলতে চেয়েছিল!
তাদের ভাষায়, কেউ যদি নবীর কবরের সামনে দাঁড়িয়ে সালাম দেয়—সে মুশরিক!
অতএব কবর মাটির সাথে মিশিয়ে দাও!
হায়! এমন বিকৃত ধর্ম যারা প্রচার করে তারা নিজেরাই কী শিরক থেকে মুক্ত?

বন্ধুগণ!
ওহাবী মতবাদ এমনই এক অন্ধ দাওয়াত—যেখানে কেবল নিজের মতামতই সত্য,
বাকিরা সবাই বাতিল!
তারা বলতো, “তুমি যদি আমাদের মতে না হও,
তবে তুমি ইসলামের দুশমন!”
এমন চিন্তা তো ফিরআউনের!
এমন হিংস্রতা তো আবু জাহেলের!
কিন্তু তারা এই ঘৃণা ঢেকে রাখলো “ইখলাস” আর “তাওহীদ” এর মুখোশে।

বন্ধুগণ!
কিন্তু তারা কাদেরকে হত্যা করেছিল জানো?
তাদের অধিকাংশ শিকার ছিল মুসলিম—
আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআত,
আহলে তাসাউফ, এমনকি কিছু সালাফি প্রবীণও
যারা সউদ-ওহাবী জোটে বিশ্বাস করেনি।
তাদের হাতে শহীদ হয় শায়খ দাহলান,
শায়খ সুলায়মান বিন সিহমান, মুফতি হানাফি উলামা,
এমনকি কিছু হামবলি আলেমও
যারা এই নব্য মতবাদকে ফিতনা বলেছিল।

বন্ধুগণ!
তারা মাজার ভেঙে ফেললো,
কবর গুঁড়িয়ে দিল, নাম বদলে দিল পুরোনো নগরীর—
বলল “ইসলামী সংস্কার”!
আসলে এটা ছিল ইতিহাস মুছে ফেলার অপচেষ্টা,
যেন মানুষ ভুলে যায় প্রকৃত ইসলাম কেমন ছিল।
একটা সন্ত্রাসবাদী মতবাদকে স্বীকৃতি দিতে হলে ইতিহাসকে আগুনে পোড়াতেই হয়!

বন্ধুগণ!
তারা হিজাজের শত শত গ্রাম দখল করলো,
মানুষদের বাধ্য করলো ওহাবী আকীদা গ্রহণে।
না মানলে গলা কাটল!
না মানলে ঘর জ্বালিয়ে দিল!
এবং না মানলে বলল, “এরা মুশরিক।
এদের ধ্বংস করাই ঈমান!”
এমন তত্ত্ব কোরআন কখনো শিখায়নি!

বন্ধুগণ!
আসুন দেখি কুরআন কী বলে
لَا إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ
“ধর্মে কোনো জবরদস্তি নেই।”
(সূরা বাকারা: ২৫৬)
কিন্তু ওহাবী দাওয়াত ছিল তলোয়ারচালিত
—“আমাদের মত হও, নইলে মরো!”
এই দাওয়াত ইসলাম নয়, বরং এটা জবরদস্তির মতবাদ

বন্ধুগণ!
নবী (সা.) কি কখনো মসজিদে থাকা ইহুদী বা খ্রিষ্টানদের জোর করে মুসলিম করেছেন?
কখনো কি তিনি কবর মাটিতে মিশিয়ে বলেছিলেন, “এটাই তাওহীদ?”
না!
বরং তিনি শিখিয়েছেন তাওহীদ হলো অন্তরের একনিষ্ঠতা, হৃদয়ের আনুগত্য, চরিত্রের পরিশুদ্ধতা।

বন্ধুগণ!
কিন্তু ওহাবী মতবাদ চরিত্র শুদ্ধি নয়, বরং মানুষকে কাফের ঘোষণার লাইসেন্স দেয়।
তাদের ভাষায়, “তুমি আমাদের মত না হলে তুমি জাহান্নামী।”
এমন চিন্তা তো খারেজীদের!
এমন চিন্তা তো সেই সন্ত্রাসীদের যারা ইসলামের নামে ISIS বানায়, মানুষের মাথা কেটে ভিডিও করে!

বন্ধুগণ!
তারা শুরুতে ঘোষণা করেছিল “আমরা শরীয়াহ কায়েম করবো”।
কিন্তু বাস্তবতা হলো—
সউদী রাজতন্ত্রে আজ পর্যন্ত কোনো শরীয়াহ নেই।
অথচ সেই রাজতন্ত্রকে রক্ষা করতে গিয়ে ওহাবী শায়খগণ আজও গণতন্ত্রকে হারাম বলে!
তারা বলবে, “গণতন্ত্র কুফরি ব্যবস্থা”—
কিন্তু সেই মুখে সউদী বাদশাহর প্রতি বাইআত করা ফরজ!
সউদী রাজপরিবারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলা বিদআত!

বন্ধুগণ!
এই দ্বিমুখী দ্বীনই হলো ওহাবী মতবাদ।
যেখানে একদিকে গণতন্ত্রকে হারাম বলা হয়, আরেকদিকে রাজতন্ত্রকে ইসলামের প্রতীক বানানো হয়।
তাদের মুখে যতই “ইখলাস” “তাওহীদ” “ইখলাস” বলুক না কেন,
ভিতরে লুকিয়ে থাকে ক্ষমতার লোভ, মঞ্চের লালসা, আর তেল-গ্যাস-ডলারের খেলা।
এই খেলায় ইসলাম শুধুই একটা প্রপস!
আর নবী (সা.) এর নাম শুধুই রাজনৈতিক আবরণ!

বন্ধুগণ!
তাদের দাওয়াত যেন এক বিষাক্ত মধু—বাইরে মিষ্টি, ভেতরে মৃত্যু।
তারা ইসলামের মূল শেকড় কেটে ফেলেছে!
শুধু রেখেছে কিছু মুখরোচক শব্দ—“সালাফ”, “হাকিকি ইসলাম”, “তাওহীদ”!
কিন্তু আসল ইসলাম ছিল দয়ালু, নম্র, পরিশুদ্ধ হৃদয়ের।
এই দাওয়াত তো শুধুই বিভাজন আর উগ্রতা।

বন্ধুগণ!
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—যে আন্দোলন মানুষকে ঘৃণা শেখায়, অন্য মুসলিমদের কাফের বানায়, নিজের মত ছাড়া কাউকে সহ্য করে না—
সেই আন্দোলন শয়তানের!
সেই মতবাদ কেবল বিভেদ, বিদ্বেষ আর ধ্বংস ডেকে আনে।

বন্ধুগণ!
আমরা মুসলিম—আমাদের ইসলাম শান্তির, সৌহার্দ্যের, মুক্তির ধর্ম।
যে ইসলাম শিশু, বৃদ্ধ, নারী—সবার সম্মান রক্ষা করে।
যে ইসলাম মতপার্থক্যকে হত্যা নয়, বরং সহাবস্থানে রূপ দেয়।

বন্ধুগণ!
তারা বলে, আমরা সালাফি — মানে পূর্বসূরিদের পথের অনুসারী।
কিন্তু সাহাবারা কি কখনো রাজতন্ত্রে বিশ্বাস করেছিলো?
না!
আবু বকর (রা.), ওমর (রা.), উসমান (রা.), আলী (রা.) —
তাঁরা কেউই নিজের বংশধরকে খেলাফতের সিংহাসনে বসাননি।
কিন্তু ইবনে সৌদের উত্তরসূরিরা তো রাজতন্ত্র বানিয়ে,
তাতে কুরআনের লেবেল লাগিয়ে
মেরে ফেলেছে ইসলামেরই গলা!

বন্ধুগণ!
এই সৌদি রাজতন্ত্র জন্ম থেকেই আমেরিকার দাসত্বে লিপ্ত।
১৯৩৩ সালে স্ট্যান্ডার্ড অয়েল কোম্পানির সাথে চুক্তি করে
তেল দিয়েছিল, দাম পেয়েছিল বন্দুক!
তারপর থেকে সৌদির রাজভবন হলো সিআইএ’র আঞ্চলিক দপ্তর!

বন্ধুগণ!
আজ তারা বলছে, “খিলাফত নয়, নিরাপত্তাই বড়।”
অথচ, উম্মাহর হাজারো বছর ধরে লালিত স্বপ্ন ছিল—
একক নেতৃত্ব, কুরআনের আইনে গঠিত খেলাফত!

বন্ধুগণ!
তাদের আলেমরা কি স্বাধীন?
না!
তাদের ফতোয়া আসে রাজপ্রাসাদের পরামর্শে,
এক হাদিস শোনান বারবার:
"শাসকের বিরোধিতা করা হারাম!"
কিন্তু আয়াত পড়েনা:
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ قَالُوا إِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُونَ – أَلَا إِنَّهُمْ هُمُ الْمُفْسِدُونَ وَلَـٰكِن لَّا يَشْعُرُونَ (সূরা বাকারা: ১১-১২)
"যখন তাদের বলা হয়, দুনিয়ায় ফাসাদ করো না — তারা বলে, আমরা তো শুধুই সংস্কার করছি!
জেনে রাখো, তারাই সত্যিকার ফাসাদকারী, কিন্তু তারা তা বুঝতে পারে না!"
বন্ধুগণ!
মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬১ সালে, সৌদি সরকারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। শুরু থেকেই এর উদ্দেশ্য ছিল সৌদি আরবের ‘ওয়াহাবি’ মতবাদকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ছাত্রদের শেখানো হতো একটি নির্দিষ্ট চিন্তা—যেখানে ইসলাম মানেই ছিল কড়া ফতোয়া, বাইরের সব চিন্তাকে বাতিল ঘোষণা, এবং রাজতন্ত্রের প্রতি একপ্রকার নীরব আনুগত্য।

বন্ধুগণ!
বিশ্ববিদ্যালয়টি এমনভাবে সাজানো হয়েছিল যেন এখানে যারা পড়বে, তারা নিজ দেশে গিয়ে ঠিক সেই মতবাদ প্রচার করবে—কুরআনকে নয়, বরং সৌদি ব্যাখ্যাকে ইসলাম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে। এ কারণেই আমরা দেখি, বহু আহলে হাদিস আলেম এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে এসে নিজ দেশে "শিরক", "বিদআত" ইত্যাদির বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেও, সৌদি রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটাও কথা বলে না। তারা গণতন্ত্রকে কুফরি বললেও, রাজতন্ত্রকে কখনোই প্রশ্ন করে না।

বন্ধুগণ!
এই মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল এক প্রকার মতাদর্শিক কল-কারখানা। এখান থেকে তৈরি হওয়া আলেমগণ ছিলেন "চিন্তাহীন আনুগত্যের প্রতিনিধি"। তাদের মুখে ছিল কুরআনের বুলি, কিন্তু হৃদয়ে ছিল সৌদি শাসকদের খেদমত। এর মাধ্যমেই মুসলিম বিশ্বের অনেক অঞ্চলে ওয়াহাবি মতবাদ ঢুকে পড়ে, আর ধীরে ধীরে লোকজন কুরআনের মৌলিক বার্তা থেকে সরে গিয়ে সৌদি অনুমোদিত ইসলামকে 'শুদ্ধ ইসলাম' ভেবে নিতে থাকে।

বন্ধুগণ!
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌশল ছিল অত্যন্ত চতুর। শুধুমাত্র মতাদর্শ ছড়ানোর জন্য নয়, বরং আর্থিক প্রলোভনের মাধ্যমে চিন্তা-চেতনার জাল বিস্তার করা। যেসব মুসলিম দেশে দারিদ্র্য বেশি, সেসব দেশের তরুণদের বেছে নেওয়া হতো। তাদেরকে সৌদি আরবে এনে থাকা-খাওয়া, পড়াশোনা—সবকিছু ফ্রি করে দেওয়া হতো। এমনকি মাস শেষে হাতখরচ হিসেবে রিয়ালও প্রদান করা হতো। বিমান টিকিট থেকে শুরু করে মেডিকেল খরচ পর্যন্ত বহন করত সৌদি সরকার, যেন এই ছাত্ররা কৃতজ্ঞতার দায়ে মাথা নিচু করে রাখে এবং তাদের শিখিয়ে দেওয়া মতবাদ অন্ধভাবে গ্রহণ করে।

বন্ধুগণ!
সৌদি আরব এমন একটি জায়গা,
যেখানে হজ ব্যবস্থাকে বানানো হয়েছে বিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রি!
কিন্তু কুরআনের মর্মবাণীকে করা হয়েছে বণিকদের পণ্য!
এমনকি ইসলামী আন্দোলনগুলোকে কুচকিয়ে, দমন করে
তারা বিশ্ব মুসলিমের নেতৃত্বকে গলা কেটে ফেলেছে!

বন্ধুগণ!
তাদের হাতে কোনোদিন কুরআন ছিল না,
ছিল খালি ফতোয়ার ঢোল আর বন্দুকের মুখ।
মুসলিম ব্রাদারহুডের মতো হাজারো ইসলামপন্থী সংগঠনকে
তারা আমেরিকার এজেন্টদের হাতে তুলে দিয়েছে।
কেননা, তারা জানে— যদি খাঁটি ইসলাম জেগে ওঠে,
তাহলে রাজতন্ত্রের মুকুট ছিঁড়ে যাবে!

বন্ধুগণ!
তারা আজও তালেবানকে “বেতাল” বলে গালি দেয়,
কিন্তু আমেরিকার সঙ্গে কোলাকুলি করতে গিয়ে
আফগানিদের উপর বোমাবর্ষণের অনুমতি দিয়েছিল!
সেই সৌদি শাসকরাই আজ কাবা ঘরের চাবিধারী হয়ে
উম্মাহর কানের ভেতর ফিসফিস করে শয়তানি ফতোয়া ঢালে!

বন্ধুগণ!
আজ যারা গণতন্ত্রকে গালি দেয়,
তাদের মুখে আমরা সৌদি রাজতন্ত্রের সমালোচনা শুনি না কেন?
কেন?
কারণ তারা জানে —
যদি সৌদি রাজতন্ত্র ভেঙে পড়ে,
তাহলে তাদের বেতন বন্ধ হবে,
তাদের তেলভিত্তিক ভাষণ থেমে যাবে!

বন্ধুগণ!
আমরা যারা খেলাফতের কথা বলি —
আমরা রাজতন্ত্রেরও বিরোধী,
গণতন্ত্রেরও বিরোধী।
আমরা চাই কুরআনের শাসন,
নবীজীর রাহে হুকুমত,
আর উম্মাহর একতা।
বন্ধুগণ!
যদি আজও চুপ থাকো,
তবে কুরআনের এই আযাবী ঘোষণা কানে তুলে নাও—
إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنزَلْنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالْهُدَىٰ... أُولَـٰئِكَ يَلْعَنُهُمُ اللَّهُ وَيَلْعَنُهُمُ اللَّاعِنُونَ
(সূরা বাকারা: ১৫৯)
"যারা গোপন করে আমার প্রেরিত স্পষ্ট বাণী ও হেদায়াত —
তাদের উপর আল্লাহর লা'নত এবং সমস্ত লা'নতকারীদের লা'নত!"

বন্ধুগণ!
আজ সাহসের সাথে বলো:
সৌদি রাজতন্ত্র, ইসলামের প্রতীক নয় — বরং ইসলামের কাফেলা ছিনতাইকারী!
তাদের মুখোশ খুলো, তাদের ষড়যন্ত্র উন্মোচন করো,
কারণ সময় এসেছে এক বিদ্রোহী ঘূর্ণির —
যা সব রাজা-বাদশার মুকুট উড়িয়ে
কুরআনের রাজত্ব ফিরিয়ে আনবে!

Post a Comment

0 Comments