“আমি ঈমান এনেছি আল্লাহর কিতাবে, আর আপনি…?”
আপনার কমেন্ট দেখে আমি অবাক হয়েছি, যে সমস্ত বিষয়ের প্রতি আল্লাহ ইমান আনতে বলেছেন আমি সেগুলোর প্রতি ইমান এনেছি। আর আপনি ইমান এনেছেন ভুয়া সব বিষয়ের উপর। এজন্য আপনার সাথে মিলবেনা।
✊🔥 (১)
আমি ঈমান এনেছি সেই আল্লাহর প্রতি,
যিনি একক, অদ্বিতীয়, যার কোনো তুলনা নেই,
যিনি আসমান-জমিন সৃষ্টি করেছেন কেবল “কুন” বলেই।
আর আপনি ঈমান এনেছেন আপনার শায়েখের প্রতি,
যে শায়েখের কথার উপরে আপনি কুরআনের আয়াতকেও তুচ্ছ জ্ঞান করেন,
শায়েখ বললেই বলেন — “জি হুজুর” সুবহানআল্লাহ।
আর কুরআন থেকে বললে বলেন — “কিন্তু আমাদের শায়েখতো বলেনাই…”
✊🔥 (২)
আমি ঈমান এনেছি আল্লাহর কিতাব কুরআনের প্রতি,
যা লওহে মাহফূয থেকে নাযিল হয়েছে,
যা চিরন্তন, শাশ্বত, সন্দেহমুক্ত।
আর আপনি ঈমান এনেছেন বুখারী-মুসলিমের প্রতি,
যেখানে মানুষ মানুষের মুখে মুখে শোনা বর্ণনা,
আপনি বলেন — “কুরআন থাক বা না থাক, হাদিসে আছে তো!”
আপনার ঈমান আল্লাহর কিতাবে নয়,
আপনার ঈমান সেই সব কিতাবে, যেখানে মানুষের মুখরোচক গল্প সনদে বাঁধা।
✊🔥 (৩)
আমি ঈমান এনেছি ফেরেশতাদের প্রতি,
যারা আল্লাহর নির্দেশে নেমে আসে,
রিযিক বিতরণ করে, প্রাণ হরণ করে, যুদ্ধ করে।
আর আপনি ঈমান এনেছেন সেই তাবিজের প্রতি,
যা কালো সুতোয় মুড়িয়ে আপনার গলায় ঝুলছে।
আপনি ভাবেন, ঐ তাবিজ আপনার বিপদ দুর করবে,
যেন আল্লাহর ফেরেশতাদের কাজ সেই কাগজে বন্দি।
✊🔥 (৪)
আমি ঈমান এনেছি আল্লাহর রাসূলের প্রতি,
যিনি কেবল কুরআন পৌঁছে দিয়েছেন,
কোনো হানাফি-মালেকি-শাফেয়ী মাজহাব বানাননি।
আর আপনি ঈমান এনেছেন সেই মাজহাবের প্রতি,
যেখানে চারজন মানুষ চার রকমের বিধান দিয়েছে,
আর আপনি কুরআনের আয়াত রেখে সেই বিভাজনের পিছে ছুটছেন,
আপনার ঈমান আল্লাহর রাসূলের উপর নয়,
আপনার ঈমান সেই সব মানুষের ব্যাখ্যায় যারা বলে কুরআন বুঝা সহজ নয় ।
✊🔥 (৫)
আমি ঈমান এনেছি কিয়ামতের দিনে,
যেদিন আমি একলা আল্লাহর সামনে দাঁড়াবো,
কোনো পীর, কোনো শায়েখ, কোনো ফতোয়া তখন আমাকে বাঁচাবে না।
আর ঈমান এনেছেন আপনার পীরের দরবারে,
আপনি বলেন — “পীর সাহেব কিয়ামতে আমাদের ধরে বেহেশতে ঢুকিয়ে দেবেন।”
আপনি মরে গেছেন জীবিত থাকা অবস্থাতেই,
কারণ আপনার ঈমান আল্লাহর হাতে নয়, পীরের ও শায়েখের হাতে।
✊🔥 (৬)
আমি ঈমান এনেছি তাকদিরে,
যা ভালো-মন্দ সবই আল্লাহর ইচ্ছায় ঘটে।
আমি বিশ্বাস করি, আমার কপালে যা লেখা, তা হবেই,
কোনো তাবিজ, কোনো ফুঁক, কোনো পীর, কোন শায়েখ তা বদলাতে পারবে না।
আর আপনি ঈমান এনেছেন শাফার নাম করে শিরকে,
আপনি বলেন — “পীরের কাছে গেলে সব বিপদ কেটে যাবে।”
আপনি কিয়ামতের ময়দানে অবাক হবেন,
যখন দেখবেন, আপনার সেই পীর ও শায়েখ নিজের জন্য কিছুই করতে পারছে না।
✊🔥 (৭)
আমি ঈমান এনেছি আল্লাহর দেওয়া দ্বীনের সরলতায়,
যেখানে কোনো মাজারের ধর্ণা নেই, কোনো মিছিলের পীর মুরিদী নেই।
আর আপনি ঈমান এনেছেন সেই শিরকের মিশেলে,
যেখানে পীরের কবরের চারপাশে সাত পাক ঘোরাও,
যেখানে দুধ-ভাতের নেয়াজ দিয়ে মনে করো পীর খুশি হবে।
আপনি তো কুরআনের সেই আয়াত ভুলে গেছেন —
“তারা আল্লাহকে ছেড়ে এমন কিছুর ইবাদত করে যা তাদের ক্ষতি করতে বা উপকার দিতে সক্ষম নয়।” (ইউনুস ১০:১৮)
✊🔥 (৮)
আমি ঈমান এনেছি কুরআনের নির্দেশ মানতে,
যেখানে বলা হয়েছে — “তোমরা আল্লাহর অবতীর্ণ কিতাব অনুসরণ করো।” (আ'রাফ ৭:৩)
আর আপনি ঈমান এনেছেন সেই শায়েখদের কথায়,
যারা বলে — “কুরআন বুঝবে না, আমাদের কাছে আসো, আমরা বুঝিয়ে দেবো।”
আপনি শিখতে চান না সরাসরি আল্লাহর কিতাব থেকে,
আপনি চান মানুষের মুখে তৈরি বিশ্লেষণ,
যা আল্লাহর কালামের চেয়ে বড় হয়ে গেছে আপনার কাছে।
✊🔥 (৯)
আমি ঈমান এনেছি সেই সালাতের প্রতি,
যা কুরআনের নির্দেশে, আল্লাহর স্মরণে স্থাপন করি।
কোনো রুকুতে শায়েখের নাম নেই, কোনো সিজদায় পীরের নাম নেই।
আর আপনি সালাতেও পীরের ফাতিহা পড়েন,
মাজারে গিয়ে নামাজের পর হাত তুলে কবরের দিকে মোনাজাত করেন।
আপনিতো তো জানেন না, এই সিজদা কেবল আল্লাহর হক,
কিন্তু আপনি তা ছিঁড়ে দিয়ে শায়েখের দরজায় ফেলছেন।
✊🔥 (১০)
আমি ঈমান এনেছি যে দ্বীন পরিপূর্ণ —
আল্লাহ বলেছেন, “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পরিপূর্ণ করে দিলাম।” (মায়িদা ৫:৩)
আর আপনি বলছেন, “না না, দ্বীন এখনো পূর্ণ হয়নি, আমাদের শায়েখের তরীকা দরকার,
তার ফিকহ দরকার, তার ফতোয়া দরকার।”
আপনি কি কুরআনের চেয়েও বড় কোনো ফতোয়া বিশ্বাস করেন?
✊🔥 (১১)
আমি ঈমান এনেছি যে শিরক মহাপাপ,
যা আল্লাহ ক্ষমা করবেন না যদি তাওবাহ ছাড়া মৃত্যু হয়।
আর আপনি ঈমান এনেছেন সেই মাজারে,
যেখানে “ইয়া গাউস মাদাদ” বলে মৃত মানুষকে ডাকেন।
আপনি ইমান এনেছেন শিরকের সাথে, নবীকে বানিয়েছেন বিধানদাতা ও হালাল হারামের মালিক।
আপনি কুরআনের সেই আয়াত কি পড়েননি —
“তুমি কেবল আল্লাহর ইবাদত করো এবং শিরক থেকে দূরে থাকো।” (যুমার ৩৯:১১)
✊🔥 (১২)
আমি ঈমান এনেছি সেই কুরআনের আলোকে,
যা অন্ধকার ভেদ করে সত্যের পথ দেখায়।
আর আপনি ঈমান এনেছেন সেই কালো গলায় ঝোলানো সুতা,
যা কোনো হুজুর আপনার হাতে বেঁধে বলেছে — “এটা আপনাকে রক্ষা করবে।”
আপনি কুরআনের পরিবর্তে কুরআন বিরোধী হাদিসে ইমান এনে মুশরিক হয়েছেন।
অথচ মনে করে আছেন আপনিই সঠিক পথে?
✊🔥 (১৩)
আমি ঈমান এনেছি আল্লাহর কিতাব পড়তে, বুঝতে, চিনতে।
আমি আল্লাহর কালাম সরাসরি পড়ি, কোনো শায়েখের বানানো ব্যাক্ষার দয়া চাই না।
আর আপনি ঈমান এনেছেন সেই দাড়ি-টুপি-লম্বা জুব্বার বাহার দেখে,
আপনি বলেন— “যা হুজুর বলছে তাই শুনো, কুরআনের দরকার নেই, কুরআন আমরা বুঝিনা।”
আপনি কি জানেন না, কিয়ামতের দিন হুজুরও বলবে —
“আমার নিজের জন্য কোনো ক্ষমতা নেই, আমি কেবল একজন মানুষ।”
✊🔥 (১৪)
আমি ঈমান এনেছি যে, আল্লাহর কিতাবই হবে আমার বিচারের মানদণ্ড।
কুরআনই সাক্ষী দেবে আমার জন্য বা আমার বিরুদ্ধে।
আর আপনি ঈমান এনেছেন এমন হাদিস সমুহের প্রতি যার সংখা আপনার জানাই নাই।
আপনি ইমান এনেছেন এমন সব হাদিসের প্রতি যা কুরআনের বিরুদ্ধে দাড়ায়। যেটাকে আপনি সহীহ বলেন আর অন্যজন বলে জাল।
আপনি বলছেন যে, আপনার শায়েখ কিয়ামতে সুপারিশ করবে।
কুরআন তো বলছে, “কেউ কারো জন্য কিছু করতে পারবে না।”
আপনি শুনবেন না, কারণ শায়েখের কথাই আপনার কাছে শেষ কথা।
🌿🔥 উপসংহার
দেখেন ভাই,
আমি কোনো শায়েখ-হাদিস-মাজহাবের দাস নই।
আমি কেবল আল্লাহর, কেবল তার কুরআনের।
যখন কিয়ামতের ময়দানে দাঁড়াবো,
আমি বলব — “হে আমার রব, আমি তো কেবল তোমার কিতাবকেই আঁকড়ে ধরেছিলাম।”
আর আপনি তখন বলবেন — “হে আমার শায়েখ…” আপনি সহীহ বলেছেন বলেইতো আমি মেনে চলেছি, এখন আমার জন্য শুপারিশ করুন।
দেখা যাক কে সফল হবে সেইদিন!
0 Comments