ইসলামী বিদ্রোহের জাগরণ
১. আগুন আমি, ঈমানের পবিত্র শিখা,
আমি শপথ করে বলি, আমি মানব না কোনো শাসন,
যা আসে রাজার দরবার থেকে,
যা আসে মুনাফিকের ফতোয়া থেকে,
আমি মানব সেই আইন—
যা নাযিল হয়েছে লাওহে মাহফুজ থেকে,
যার প্রবর্তক একমাত্র রবুল আলামীন,
আর ঘোষণা দাতা—মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ!
২. আমি সেই তাওহীদের ধ্বনি,
যা বাজে পাহাড়ে, উপত্যকায়, মরুতে, সমুদ্রে—
আমি সেই সুর, যা ফিরাউনকে কাঁপিয়ে দিয়েছে,
যা নমরূদকে ভস্ম করেছে,
যা আবু জাহলকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ধুলায়!
আমি সেই মুজাহিদের কণ্ঠ,
যে বলে—“আমার রব আল্লাহ”—
এবং মাথা দেয় কুফরের ময়দানে,
তবু মাথা নত করে না কারও বানানো আইনের কাছে!
**৩. আমি বিদ্রোহ করি—
মনগড়া হাদীসের নামে বানানো আইনদের বিরুদ্ধে,
আমি প্রশ্ন করি,
হে মানুষ, হে উম্মাহ!
তোমরা কি জানো—
নবী আল্লাহর বিধান ছাড়া কিছু বলেননি?
“তিনি মনমতো কথা বলেন না।
তা তো কেবল ওহী, যা তাঁর কাছে প্রত্যাদেশ হয়।” (সূরা আন-নجم: ৩-৪)
তবে কেন তুমি বলো—
“এই হাদীসটি আছে ইমাম তিরমিযির কাছে”?
“এই হাদীসটি বুখারী-সহীহ, তাই মানতেই হবে”?
আমি বলি, হে জাতি, বুঝো—
হাদীস হিদায়াতের উৎস নয়—
হিদায়াত একমাত্র আল কুরআন!
**৪. আমি বিদ্রোহ করি—
তাদের বিরুদ্ধে, যারা বানিয়েছে ধর্মের নামে দাসত্বের ফাঁদ,
যারা হককে করে গুম,
আর বাতিলকে দেয় মঞ্চ—
মঞ্চে বসে তারা, গায়ে তাদের কালো জুব্বা,
তারা ইজতিহাদের নামে বিকিয়ে দেয় ইমান,
তারা সিজদাহ দেয় রাজপ্রাসাদে,
আর ফতোয়া দেয় সাধারণ মুসলমানের বিপক্ষে!
**৫. আমি তাদের চ্যালেঞ্জ করি—
যারা আল্লাহর শরীয়তের পাশে বসায় নিজেদের বানানো ফতোয়া,
যারা বুখারীর নাম নিয়ে চাপায় আইন,
আর কুরআনের স্পষ্ট আয়াত ভুলে যায়।
আল্লাহ বলেন, “এই কিতাব—
এতে কোনো সন্দেহ নেই,
হিদায়াত মুমিনদের জন্য।” (সূরা আল-বাকারা: ২)
তবে কেন কিতাব ছেড়ে বানানো কিতাবকে ধরো?
তোমার হিদায়াত কি আল্লাহ দেননি?
নাকি তোমার প্রভু এখন ইমাম বুখারী?
**৬. আমি সেই আগ্নেয়গিরি,
যার ভিতরে জ্বলছে সাহাবীদের ধৈর্য,
যারা ছিলো কুরআনের অনুসারী,
তারা খুঁজে নিতো ফয়সালা কুরআনে,
তাদের কাছে হাদীস ছিলো স্মরণ, ছিলো শিক্ষা—
কিন্তু আইন ছিলো কুরআন!
**৭. আমি বিদ্রোহী—
সেই জ্ঞানীদের বিরুদ্ধে, যারা জ্ঞানের নামে অন্ধত্বে ঠেলে দেয় জাতিকে,
যারা মুসলমানের চোখে কালো কাপড় বেঁধে দেয়,
যারা কুরআনের বদলে ফতোয়া মুখস্ত করায়,
যারা বলে, “তোমরা বুঝো না কুরআন”—
আর তারাই বানিয়ে নেয় ধর্মের একচেটিয়া মালিকানা!
**৮. আমি সেই ঝড়—
যে ধুয়ে ফেলবে সব জংধরা চিন্তা,
যে ফিরিয়ে আনবে সেই মূলনীতি—
“তোমাদের রব কি তোমাদের জন্য যথেষ্ট নন?” (সূরা যুবর: ৩৬)
“তোমরা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা করো না?” (সূরা নিসা: ৮২)
তবে কেন কুরআনের বদলে ফতোয়ায় চলে ঈমান?
**৯. আমি সেই বিদ্রোহ—
যা আসে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা থেকে,
আমি সেই আহ্বান—
“তোমরা আল্লাহর রসূলের আনুগত্য করো।”
রসূল কী এনেছেন?
তিনি এনেছেন কুরআন,
তাঁর কাজ ছিল ঘোষণা করা,
নবী কোনো শরীয়ত রচনা করেননি।
তিনি বলেন, “আমি তো কেবল ওহী অনুসরণ করি।” (সূরা আহকাফ: ৯)
**১০. আমি সেই মঞ্চ বানাবো,
যেখানে কুরআন থাকবে সর্বোচ্চ—
নিচে থাকবে হাদীস, ইতিহাস, মনিষীদের কথা,
কারণ কুরআনই আইন,
আর হাদীস—তাফসীর, ব্যাখ্যা, শিক্ষা!
যা কুরআনের বিরোধী নয়,
তা গ্রহণযোগ্য,
কিন্তু কুরআনের বিরুদ্ধে?—
তা বাতিল, তা মিথ্যা, তা প্রত্যাখ্যাত!
**১১. আমি তাদের ডাক দিচ্ছি—
যারা পাথর হয়ে গেছে,
যারা মনে করে—কুরআন বোঝা কঠিন!
না ভাই, কুরআন তো সহজ!
“আর আমি কুরআনকে সহজ করেছি উপদেশ গ্রহণের জন্য,
কেউ আছে কি উপদেশ গ্রহণকারী?” (সূরা কামার: ১৭, ২২, 32, 40)
**১২. আমি নবীজিকে ভালোবাসি—
তাঁর চুলের রেশমও আমাকে প্রিয়,
তাঁর পদধূলিও আমার জানের চেয়েও দামি,
তবে আমি বিদ্রোহ করি—
তাঁকে ঈশ্বর বানানোর বিরুদ্ধে!
তাঁকে শরীয়তের প্রবর্তক বানানোর বিরুদ্ধে!
কারণ, “আল্লাহর শরীয়ত, আল্লাহই তৈরি করেন।”
**১৩. আমি তোমাদের বলছি—
ওঠো, দাঁড়াও, জেগে ওঠো!
আল্লাহর কিতাবকে সামনে আনো,
ব্যাখ্যার জন্য ব্যবহার করো হাদীস,
কিন্তু হুকুম মানো একমাত্র কুরআনের!
**১৪. আমি বিদ্রোহী—
হাদীসের মানহাজ নয়, কুরআনের পথে!
আমি কুরআনের দাস,
আর হাদীসের ব্যাখ্যা, গ্রহণ করি আলো হিসেবে—
না যে আলো কুরআনের বিপরীত!
**১৫. আমি সেই কণ্ঠ—
যে বলে, “তুমি ফিরে চলো রবের কাছে,
তুমি কুরআন পড়ো অর্থসহ, গভীর চেতনায়,
তুমি চিন্তা করো—এটা কিসের আহ্বান?”
এটা মানবতার মুক্তি,
এটা নারী-পুরুষের সমতা,
এটা দাসত্ব মুক্তির কিতাব—
যার জন্য তুমি বিদ্রোহী হতে পারো,
জীবন দিতে পারো,
কিন্তু বিক্রি করতে পারো না এই ঈমান!
শেষে:
আমি একজন “বিদ্রোহী”—
শিরকের, মিথ্যার, মুনাফেকির, দলীয়তা, মাযহাবপন্থার, হাদীস-নির্ভর শরীয়তের বিরুদ্ধে—
আমি সেই আগুন, যা শিখায়, জ্বালায়,
কিন্তু আল্লাহর জন্য—
আল্লাহর কিতাবের জন্য—
আর রাসূলের সত্যিকার অনুসরণের জন্য!
0 Comments